নারায়ণগঞ্জ খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তি প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে একটি প্রতারকচক্র সব সময় সক্রিয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এদের ভিড় করে থাকতে দেখা যায়।এই দালাল ও প্রতারকচক্রের কাছে সাধারণ রোগীরা তো বটেই; হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীরাও যেন অনেক ক্ষেত্রে অসহায়। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের হয়ে কাজ করা এসব দালাল রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে নির্দিষ্ট হারে কমিশন পেয়ে থাকে। এর বাইরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী দেখানোর সুযোগ করে দেওয়ার নামেও এরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়।
ডাক্তার, নার্স ও দালালদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের রোগীরা। এমন পরিণতিতে হাসপাতালে আসা রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নামে চলমান নৈরাজ্য ও নির্মমতা দেখার যেন কেউ নেই নারায়ণগঞ্জ জেলায়। একটু ভালো আর বিনামূল্যে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা পেতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় আশা নিয়ে দরিদ্র রোগীরা হাসপাতালে আসে। কিন্তু এখানে এসেই তাদের পড়তে হয় বিপাকে, নানা বিড়ম্বনায়। হাসপাতালের প্রবেশ গেট থেকে শুরু করে কেবিন, বেড পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এক শ্রেণির দালাল। নানা প্রলোভন, যেমন দ্রুত ডাক্তার সেবা পাইয়ে দেয়া, প্রয়োজনীয় ঔষধ, থাকার জন্য কেবিন ইত্যাদি দেখিয়ে তারা দরিদ্র ও সহজ সরল রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এক রকম সর্বস্বান্ত করে ছাড়ে। বিষয়টা অনেকটা এমনই- আগে টাকা পরে চিকিৎসা সেবা। এদের খপ্পরে পরে অনেকেরই চিকিৎসা সেবা তো দূরের কথা উল্টো দ্বিগুণ অসুস্থ হয়ে কখনো হাসপাতালের বারান্দায়ও শুয়ে কাতরাতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায় হাসপাতালের ভেতর ঘুরাঘুরি করছেন দালাল চক্রের সদস্যরা। কোনো রোগী হাসপাতালে আসলেই তার সঙ্গে আসা আত্মীয়-স্বজনদের পিছু নিচ্ছে দালালরা। উন্নত চিকিৎসার নামে তাদের ক্লিনিকে যেতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আবার রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ওষুধ কেনার জন্য ফার্মেসিতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দালাল জানান, হাসপাতাল থেকে কোনো রোগীকে ক্লিনিকে, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠাতে পারলে তারা ওই রোগীর মোট বিলের ২৫ ভাগ পেয়ে থাকেন। এছাড়া ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনলেও তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন।
ভুক্তভোগীদের দাবী র্যাব,গোয়েন্দা,পুলিস প্রশাসন যাতে অতিদ্রুত এইসকল দালালদের উপর নজর রেখে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেন।