তিনি যেন বিশ্বকাপের ট্র্যাজিক হিরো। পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে ব্রাজিল হেক্সা জয়ের স্বপ্ন দেখছে ২০ বছর ধরে।
সেই স্বপ্নের সবচেয়ে বড় সারথি নেইমার। স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার চাপটা ছিল বেশি।
কিন্তু এবারও নেইমার হতাশ করলেন সেলেসাও ভক্তদের। এবারও বিদায় নিলেন ভেজা চোখে।
কোয়ার্টার ফাইনাল ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারার পর রীতিমত বিধ্বস্ত ব্রাজিল। সময়ের সেরা দল নিয়ে এসেও আবার সেই কোয়ার্টার থেকেই ছিটকে গেল সেলেসাওরা। এমন স্তব্ধ হার তাই নেইমারের কান্না আটকে রাখতে পারেনি। টাইব্রেকারে পঞ্চম শটটি নেওয়ার জন্যই হয়তো প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু তার আগেই খেল খতম। মার্কিনিয়োসের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসলে উল্লাসে মেতে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে নেইমার ফেটে পড়েন কান্নায়। তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন রাইটব্যাক দানি আলভেস।
হেক্সা জয়ের জন্য কী করেননি নেইমার! প্রথম সার্বিয়ার বিপক্ষে গোড়ালি মচকে যাওয়ার পর বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ারই উপক্রম হয়েছিল। গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচও খেলতে পারেননি। কিন্তু চোট কাটিয়ে ঠিকই ফিরে আসেন শেষ ষোলোর ম্যাচে। দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া সেই জয়ে একটি গোলও করেন তিনি। আজ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ছিলেন দুর্দান্ত ছন্দে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও যখন কোনো গোল হয়নি তখন খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়।
সেখানেই বাজিমাত করেন নেইমার। ১০৫ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে অবিশ্বাস্য এক গোল এনে দেন ব্রাজিলকে। কিন্তু সেই উল্লাসের রেশ বেশি সময় থাকেনি। ১১৭ মিনিটে পেতকোভিচের গোলে অসাধারণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ক্রোয়েশিয়া। অন্যদিকে নেইমার বনে গেলেন ট্র্যাজিক হিরো। ২০১৪, ২০১৮ বিশ্বকাপের পর ২০২২ বিশ্বকাপেও নেইমারের গল্পটা সেই একই থাকল!