সকাল নারায়ানগঞ্জঃ শনিবার রাতে (১১ জনুয়ারি) দুইজনকে এবং রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে একজনকে গ্রেফতার করে রুপগঞ্জ থানা পুলিশ ।
গ্রেফতারকৃতরা
হলেন- রুপগঞ্জ উপজেলার গর্ন্ধবপুর এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ, কর্ণগোপ
এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আফজাল ও রূপসী প্রধান বাড়ি এলাকার আবুল
কালামের ছেলে তারাবো পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহান।
এর আগে ধর্ষিতা শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারের
বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) রফিকুল হক জানান,
এই ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর শনিবার রাতে আসামী তৌসিফ ও আফজালকে
গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিমতে রবিবার বেলা এগারোটার দিকে
মামলার প্রধান আসামী তারাবো পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান
সোহানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তিনি জানান, অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেফতারের
চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে অনুসারে , বাদীর মেয়ে গন্ধর্বপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর একজন শিক্ষার্থী। গত কয়েকদিন আগে একই এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ তার মেয়ের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা ধার নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে গন্ধর্বপুর বাসস্ট্যান্ডে তার মেয়ে ধারের টাকা ফেরত আনতে যায়। পরে টাকা ফেরত নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তৌসিফ, আফজাল, তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহান ও তানভীরসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
পরে রূপসী এলাকার একটি বাড়িতে ও কর্নগোপ এলাকার একটি বাড়িতে তারা দুইদিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। টানা দুইদিন ধর্ষণের পর শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকায় ধর্ষিতাকে ফেলে রেখে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে মৌচাক এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও গাড়ির টায়ার জ্বলিয়ে অবরোধ করেছে এলাকাবাসী ও গর্ন্ধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন তারাবো পৌরসভার কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাজীব, গর্ন্ধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র সাহা, তারাবো পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন রাসেল, পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের ফারুক প্রধান, তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাদল, শিক্ষক শিহাবুর রহমান, আব্দুস সোবহান, মাহমুদ সোমা প্রমূখ। এসময় বিক্ষোভকারীরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পরে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বার্হি কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে আশ্বাস দিলে তারা সড়ত অবরোধ তুলে নেন।
উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম এসময় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, অপরাধীরা যে দলেরই হউক না কেন তারা কেউ পার পাবেনা। আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো।