সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে নারায়ণগঞ্জের রাস্তায় জনসমাগম ঠেকাতেই ব্যস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আর এ সুযোগে শুরু হয়েছে রমরমা মাদকের কারবার। খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে বাড়িতে ও নগরীর কিছু নির্জন এলাকায় বসছে মাদকের আসর। সেদিকে নজর দেওয়ার সময় খুব কমই পাচ্ছে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে সহজ স্বীকারোক্তি এসেছে পুলিশের পক্ষ থেকেও। জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এ কারণে মাদকবিরোধী অভিযান কিছুটা কমে এসেছে।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদকের জোন হিসেবে পরিচিত নগরীর গলাচিপা – চাষাড়া রেললাইনে এখনো চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। মাদক সেবনে নগরীর বিভিন্ন এলাকার লোকজনের আনাগোনা আছে এলাকাটিতে। এখানে এখন গাজা, হেরোইন ও ইয়াবার ব্যবসা জমজমাট।
আর নগরীর বিভিন্ন অলি গলিতে বাশ দিয়ে লকডাউন করায় এসব অলি-গলিতেও বেড়েছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। কিছু এলাকায় বিক্রি হচ্ছে হেরোইন, ইয়াবা এবং গাঁজাও। তবে ফেনসিডিলই সবচেয়ে বেশি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে নগরীত প্রধান প্রধান সড়কে মোটরসাইকেল ও রিকশায় একাধিক ব্যক্তির আরোহী হওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও পাড়া-মহল্লায় এর কোনো বালাই নেই। সেখানে মোটরসাইকেল দাপিয়ে একসঙ্গে মাদক সেবনে যাচ্ছেন দুই থেকে তিনজন করে যুবক। এরা ফেনসিডিল ও ইয়াবায় আসক্ত। যেখানে দাম একটু কম পান, সেখানেই মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটে যান তারা। পকেট খালি করে নেশায় বুঁদ হয়ে আবার ঘরে ফেরেন। পথে কখনো কখনো ঘটে দুর্ঘটনা।
এদিকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক সংগ্রহে ঠিকই বের হচ্ছেন। যেসব বাড়িতে বা যেসব স্থানে মাদক পাওয়া যায়, সেখান থেকে কিনে আনছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এ কাজে কিছু নারীদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সকাল-বিকাল নগরীর চাষাড়া-গলাচিপা রেললাইন এলাকায় বসে থাকে কিছু উঠতি বয়সী ছেলেরা। তাদের কাছে হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা সবই থাকে। টাকা দিলেই এসব মাদকের পুরিয়া পকেট থেকে বের করে দেয় তারা। চাইলে ফেনসিডিলও এনে দেয় তারা।
এদিকে নগরীর দেওভোগ আখড়ার মোড়, পাক্কা রোড, ১নং বাবুরাইল, ২নং বাবুরাইল, পাল পাড়া, উকিল পাড়া রেল লাইন, নন্দীপাড়া রেললাইন, এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় মাদক বিক্রেতারা। দাপটের সঙ্গে মাদকের ব্যবসা চালাচ্ছেন এসব মাদক কারবারিরা। এসব পাড়া-মহল্লায় অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদকের কেনাবেচা চলে। করোনাভাইরাসের কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে তাদের কারবার জমজমাট।
পুলিশের ঐ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশ্বজুড়েই এখন করোনা ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। আমরাও সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছি। ফলে মাদকের বিরুদ্ধে কাজ হচ্ছে কম। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে।