খানপুর হাসপাতালের ডাক্তার ও ইমারজেন্সি কক্ষের বাইরে রোগীর লম্বা সিরিয়াল। সিরিয়ালের বেশির ভাগ রোগীর হাতে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রোগ পরীক্ষার রিপোর্ট। রোগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন চার তরুণ। তারা রোগীদের ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশনা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে না করিয়ে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষানিরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। নিজেদের পরিচয়ে তারা রোগীদের জানান, তারা এই ডাক্তারের সহকারী।
সরেজমিনে গিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) এই চিত্র দেখা যায়। তবে এই চিত্র কেবল ১০২ নং কক্ষেই নয়, হাসপাতালের বহির্বিভাগের প্রায় সব কক্ষের চিত্র একই। হাসপাতালে ডাক্তারের সহকারীদের কাছে নেই তাদের পরিচয় পত্র। ডাক্তারের সহকারীদের নামে হাসপাতালে চলছে দালালদের অভিনব দৌরাত্ম্য।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে দালাল চক্রের এক নারী সদস্যের সাথে কথা হয়। তিনি পরিচয় দেন তার নাম লিপি এবং তিনি বন্দরে থাকেন। রবি, বাদল,ইকবাল,সাহেব আলী,রীমন,রবিন,মনির, রমজান,রাসেল,দ্বীন ইসলাম,চিনু,তসলিমা, রাজিয়া,সুমি,মতা,শিউলী,পারবিন, ফয়েজ মুস্তাফিজসহ বেশ কয়েকজন দালালের নাম তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা দালালদের হাতে নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। কারণ হাসপাতালের নিরাপত্তা ও দালাল নিরসনের কর্মীর সঙ্গেই দেখা মেলে দালালদের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক।
একজন রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমার ছেলেকেও ডাক্তার দেখানোর পর ডাক্তারের অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচয় দিয়ে এক ছেলে এই খানেই (ইউনাইটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টার) করাতে বলছে। হাসপাতালের টেস্ট নাকি ভালো না। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমার সঙ্গে গিয়ে টেস্ট শেষে বলে তারে ২০০ টাকা দিতে। টেস্টের খরচ ১ হাজার আর তারে দিছি ২০০ টাকা।’ হাসপাতালে দালালরা প্রকাশ্যে তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নিতে দেখা যায় না।