1. [email protected] : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. [email protected] : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
সরকারের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশে ই-সিগারেট উৎপাদনের পায়তারা - সকাল নারায়ণগঞ্জ
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
সরকারের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশে ই-সিগারেট উৎপাদনের পায়তারা সোনারগাঁয়ে ওয়াক-ওয়ে নির্মাণের দাবিতে আলোচনা সভা মাদরাসার উন্নয়নে ৫ লাখ টাকা অনুদান  দিলেন মাসুদুজ্জামান জলবায়ু পরিবর্তন: জলবায়ু পরিবর্তনে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নূরকে আহত বা বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকেআটকের ঘটনা নব্য ফ্যাসিজমের আস্ফালন খানপুরে জমজমাট ফুটবলের আসর, শুরু হচ্ছে খানপুর ফুটবল প্রিমিয়ার লিগ সিজন-৭ আপনি কোন কচু এটা দেখার সময় বাংলাদেশের জনগণের নাই, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী দেওভোগে মসজিদে ডাকাতি ! খাদেম রক্তাক্ত আহত ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু জাতীয় ক্রিকেট লিগ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে ৮ দাবি

সরকারের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশে ই-সিগারেট উৎপাদনের পায়তারা

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪৬ Time View

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ

সরকার ই সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করলেও আন্তর্জাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো সুকৌশলে দেশীয় কিছু দোকানদার এর মাধ্যমে এবং অনলাইনে ই-সিগারেট প্রসারের চেষ্টা করছে। যদিও এই ই-সিগারেটের বাজার খুবই কম- কিন্তু সুকৌশলে তারা এই ই-সিগারেটের বৈধতা নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং যুব সমাজকে ধূমপানে ও ই-সিগারেটে আসক্ত করছে। তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মীরা ই-সিগারেটের নিষিদ্ধ বিধান বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ এর আহ্বান জানায়। চিহ্নিত কিছু দোকান এবং অনলাইনে ই-সিগারেট বিক্রি হয় এই সমস্ত  দোকানগুলোকে কঠোর শাস্তির দেওয়ার পাশাপাশি যে সকল সিগারেট কোম্পানি তাদের সহযোগিতা করছে, গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে তাদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক। আজ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আয়োজিত  অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক ন্যাশনাল প্রফেসনাল অফিসার সৈয়দ মাহফুজুল হক । বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহছানিয়া মিশন এর হেলথ এন্ড ওয়াশ এর পরিচালক ইকবাল মাসুদ, আইন ও নীতি বিশেষজ্ঞ এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ল’ইয়ার নেটওয়ার্ক এর সদস্য সচিব ব্যারিষ্টার নিশাত মাহমুদ, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ, এইড ফাউন্ডেশন এর প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা প্রমুখ। টিসিআরসির প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ফারহানা জামান লিজার সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিসিআরসির প্রজেক্ট অফিসার মোঃ জুলহাস আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন টিসিআরসির প্রকল্প পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মোঃ বজলুর রহমান

মূল প্রবন্ধে মোঃ জুলহাস আহমেদ বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা সচল রাখার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পন্য বাজারে নিয়ে আসছে যার মূল উদ্দেশ্য তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ই-সিগারেটের ব্যবহার বিশেষত তরুণদের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যদিও সরকার ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এর আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে, টিসিআরসি কর্তৃক এপ্রিল থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রে ই-সিগারেট সহজলভ্য। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, জনসমাগম এলাকাগুলোতে ই-সিগারেটের বিক্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ই-সিগারেট প্রদর্শিত হচ্ছে। বাজারে মূলত বিভিন্ন ফ্লেভারের ই-লিকুইড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। খুচরা বিক্রেতারা অবৈধভাবে ই-সিগারেট ও ই-লিকুইড আমদানি করছে। এছাড়া চকবাজারসহ বেশ কিছু এলাকায় অবৈধভাবে ই-লিকুইড তৈরি হয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে ই-সিগারেট বেশ সহজলভ্য হয়ে গেছে। অন্যদিকে অনলাইন বিক্রেতারাও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ও অনলাইন বাজারে ই-সিগারেটের বিক্রয় ও প্রচার করছে। গবেষণার এসব ফলাফল দুর্বল আইন প্রয়োগকে চিহ্নিত করছে এবং উৎপাদন, বিপণন, অনলাইন বিক্রি ও বিতরণকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সমন্বিত আইনি কাঠামোর জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে সামনে আনছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মাহফুজুল হক বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভ্যপিং করছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি সাধারণ সিগারেট ও ই-সিগারেট দুটোতেই আসক্ত। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ই-সিগারেটকে তাদের দেশের প্রধান স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পাশ্ববর্তীদেশ ভারতেও ই-সিগারেট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। টিসিআরসির এই গবেষণা ফলাফল থেকেই বোঝা যায়, আমদানি নিষিদ্ধের পরেও বাজারে ই-সিগারেটের বিক্রয় বন্ধ হয়নি, যা স্পষ্টভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যায়। শুধু আমদানি নিষিদ্ধ বললে হবেনা, পাশাপাশি কঠোরভাবে এর প্রয়োগ করতে হবে, অনলাইন মার্কেট এবং বাজার মনিটর করতে হবে কড়াকড়ি ভাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো উন্নয়নশীল দেশে ব্যবসা করতে আসে কারন তারা ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারে, পরিবেশের ক্ষতি করে উৎপাদন করতে পারে, জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে ব্যবসা করতে পারে। এদের মূল টার্গেটই থাকে ব্যবসা। এরা জনস্বাস্থ্যের কথা ভাবেনা। তাহলে সরকার কেনো তাদের মতামত শুনবে। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা সরকারের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব তাদের পালন করতেই হবে।ই-সিগারেট এদেশে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য, এর উৎপাদনও নিষিদ্ধ, তাহলে অবশ্যই ই-সিগারেট সামগ্রিকভাবে নিষিদ্ধ। ই-সিগারেটের বিক্রয় নিষিদ্ধ, এর প্রচারণা নিষিদ্ধ। সকল ই-সিগারেটের দোকানে মোবাইল কোর্ট করা উচিত এবং সকল ই-সিগারেট, লিকুইড বাজেয়াপ্ত করা উচিত। সিগারেট কোম্পানিগুলো বিভিন্ন গোপন কার্যকালাপের মাধ্যমে দেশে ই-সিগারেটকে বৈধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটাকে এখনই নিষিদ্ধ করা হোক।

ইকবাল মাসুদ বলেন, আমদানি ও উৎপাদন নিষিদ্ধ পণ্য অবশ্যই বিক্রয়ও নিষিদ্ধ। এটা নিয়ে সংশয়ের কোন জায়গা নেই। সিগারেট কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা গবেষণার রেফারেন্স দেখায় জনগনকে ধোঁকা দেয়ার জন্য, এই বিষয়ে জনগনের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ই-সিগারেট জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি, তরুণ প্রজন্মের জন্য হুমকি। এটাকে কোনভাবেই হার্ম রিডাকশন পণ্য হিসেবে দেখা যাবেনা। এই গবেষনায় যে ফলাফল আমরা পেয়েছি সেটা খুবই ভয়াবহ। তাই আর দেরি না করে এখনই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

ব্যারিষ্টার নিশাত মাহমুদ বলেন, ই-সিগারেটের ভয়াবহতা বিবেচনা করে বিশ্বের ১৩২টি দেশ ইতিমধ্যেই ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধ করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে ই-সিগারেটের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ঠিকই কিন্তু বিক্রয় নিষিদ্ধ করেনি। আর এখানেই আইনি গ্যাপ থেকে যাচ্ছে। এই গবেষণা ফলাফল পলিসি ব্রিফ আকারে পলিসিমেকার বরাবর প্রেরন করা হোক এবং আইনি গ্যাপটা কে তুলে ধরে তাদেরকে অনুরোধ করা হোক, বাংলাদেশে ই-সিগারেট সম্পূর্নভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য। 

হেলাল আহমেদ বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলো আগামী ১০০ বছর ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য বাজারে ই-সিগারেট নিয়ে এসেছে। এই ই-সিগারেট এখন মহামারি আকার ধারন করেছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে এখনই ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।ইদানিং দেশে ই-সিগারেটের বিভিন্ন সাইজের সুবিধা নিয়ে বাচ্চারা বাবা-মার চোখ ফাঁকি দিয়ে সহজেই এটি ব্যবহার করছে। ঢাকার বেশ কিছু স্কুলের বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগে ই-সিগারেট পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে যেহেতু ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য তার মানে এইসব যারা বিক্রি করছে তারা নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করছে এবং এই ধরনের নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করা ক্রিমিনাল অফেন্স।

শাগুফতা সুলতানা বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেটের আমদানি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বাজারে ই-সিগারেট এতো সহজলভ্য যা খুবই হতাশার। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারনে বাজারে এতো প্রাপ্যতা। সিগারেট কোম্পানিগুলো মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারকে ভূল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করে। অনেক সময় তারা সরকারের উপর প্রভাব সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। সরকারকে এই প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কোন কম্প্রোমাইজ না করে বরং আইনের কঠোর বাস্তবায়ন প্রয়োজন এবং এখনই ই-সিগারেট ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এইড ফাউন্ডেশন, আর্ক ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনোমিকস রিসার্চ, বিএনটিটিপি, ডাস্, বিসিসিপি, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ল’ইয়ার’স এসোসিয়েশন, নাটাব, মানস, প্রত্যাশা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি প্রতিনিধিবৃন্ধ, সাংবাদিক, এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রোফেশনাল, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। বক্তারা দাবি করেন, যেসব ব্যবসায়ীরা দোকানে বা অনলাইনে এগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া অনলাইন পোর্টালে যারা বিক্রি করছে সে সমস্ত পোর্টালগুলোকে অবিলম্বে অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণে আহবান জানানো হয়। পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার আগেই বাংলাদেশে ই-সিগারেট ও এ-জাতীয় সকল পণ্য নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবী। 

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL