সিদ্ধিরগঞ্জের আইয়ুব নগরে নির্মাণাধীন দশতলা পার্ক টাওয়ার ভবনের ৭ তলার লিফটের অংশ দিয়ে পড়ে ফাহিম (১৪) নামের কিশোর এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের পরিবারকে মালিক পক্ষ ক্ষতি পূরণের আশ্বাস দিয়ে বর্তমানে ক্ষতি পূরণ দিতে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে নাসিক ৫ নং ওয়ার্ডের আইয়ুব নগর এলাকায় বেশ আলোচনা সমালোচনা চলছে। স্থানীয়রা মালিক পক্ষের এমন গড়িমসি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্মাণাধীন পার্ক টাওয়ারের মালিক সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী আমিনুল ও রিপনসহ ১৮ জন। তারা কোন ধরনের সেফটি ছাড়াই ভবনটির নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিল। নিহত শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভবনের দশটি ফ্লাটের মালিক রিপন প্রথমে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দেন।
মালিক পক্ষের দায় এড়াতে মূলত রিপন নামের ওই ভবনের ১৮ জনের একজন পার্টনার নিজেকে বিভিন্ন নামে বেনামে পরিচয় দিয়ে ঘটনা আড়াল করতে চান।
এদিকে নিহতের পরিবারের ভাষ্য ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঠিকাদার ইকবাল ও শ্রমিকলীগ নেতা কবির হোসেন যোগাযোগ করলেও ভবনের মালিক পক্ষের কোন লোকজন আমাদের সাথে কোন প্রকার যোগযোগ করেনি।
তবে ঘটনার দিন মালিক পক্ষের লোকজন আমাদের থানায় কোন অভিযোগ না দিতে বারন করেন। এবং আমাদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। তবে এ বিষয়ে জানতে মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভবনের ঠিকাদার মো: ইকবাল হোসেনের সাথে যোগযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পালন করছি। আমি দূর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম না। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনার পর থেকে বহুবার মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের কোন সাড়া পাইনি।
তাই কোন উপায় না পেয়ে আমি শ্রমকিলীগ নেতা কবির হোসেনের দারস্থ হই। তারপর সে ঘটনাস্থলে এসে নিহতের পরিবারকে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আমি ব্যাক্তিগত ভাবে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেও মালিক পক্ষ এ নিয়ে গড়িমসি করছে।
মালিক পক্ষের দাবি নিহতের ক্ষতিপূরণ আমি একাই বহন করবো। শুনেছি ভবনটির ১৮ জন মালিকের মধ্যে সবাই ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেও প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম ও রিপন ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি করছে বলে জানান ঠিকাদার ইকবাল। তিনি আরও বলেন, তারা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে এখন শুধু সময় পরিবর্তন করছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫ নং ওয়ার্ডের আইয়ুব নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনাস্থলেই ওই কিশোর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত ফাহিম কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার তারাচু গ্রামের মো: মনির হোসেনের ছেলে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম বার বলেন, নিহতের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। শুনেছি মালিক পক্ষের সাথে নিহতের পরিবারের মাঝে সমঝোতা হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমার আর জানা নেই।