স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম মাসেই সুফল পেয়েছে দেশ। পথের ভোগান্তি কমেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের। এবারের ঈদযাত্রায় ফেরিতে পদ্মা নদী পারাপারের দুর্ভোগ হয়নি। পদ্মা সেতু চালুর মাস পূর্ণ হয়েছে আজ সোমবার (২৫ জুলাই)।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এক মাসে টোল আদায় হয়েছে ৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এসময়ে সেতুতে গাড়ি পার হয়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৪২০টি।
টোল কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্বোধনের পর দিন ২৬ জুন থেকে সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। ২৩ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে এ টোল আদায় হয়েছে। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন গাড়ি চলাচল শুরু হয়। তবে দুর্ঘটনার মুখে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
পদ্মা সেতু দিয়ে চার ঘণ্টায় বরিশাল, যশোর এবং পাঁচ ঘণ্টায় খুলনায় যাচ্ছে বাস। সময় কম লাগছে পণ্যবাহী গাড়িগুলোরও। এতে দূরত্ব কমেছে, জ্বালানিও সাশ্রয় হচ্ছে। এ পর্যন্ত সেতুর উভয়প্রান্তে একাধিক দুর্ঘটনা ৫ জন মারা গেছে।
প্রকল্পের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দৈনিক ৪১ হাজার ৫৫০টি যানবাহন পদ্মা সেতু পারাপার হবে। প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, প্রথম বছরে ৫৪৩ কোটি টাকা টোল আদায় হবে। আশা করা হচ্ছে, এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা আসবে প্রথম বছরেই। পদ্মা সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ১ শতাংশ সুদে ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে ৩৬ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা পরিশোধ করবে সেতু বিভাগ।
পদ্মা সেতু চালুর পর এবারের ঈদযাত্রার ফেরিঘাটের দুর্ভোগ কমেছে। যান সংকটে মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আরিচায় আগের সেই দীর্ঘ সারি নেই। সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বরিশাল ডিপোর ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, ঈদের সময়ে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বাস এসেছে।
এবারের ঈদে উপচে পড়া ভিড় ছিল কুয়াকাটায়। ছুটির সময় যা সাধারণত থাকে কক্সবাজারে। পদ্মা সেতুতে পর্যটক বেড়েছে দক্ষিণের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। প্রতিদিনই পদ্মা সেতু দর্শনে আসেন হাজারো মানুষ। সেতুর দুই প্রান্তে তাদের জন্য দোকানপাট গড়ে উঠেছে। সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, এক মাসে দোকানপাট ছাড়াও রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।