1. sokalnarayanganj@gmail.com : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. skriaz30@gmail.com : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
পিতা-মাতার হক আদায়ের ক্ষেত্রে খরচ দেওয়াই যথেষ্ট? - সকাল নারায়ণগঞ্জ
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন

পিতা-মাতার হক আদায়ের ক্ষেত্রে খরচ দেওয়াই যথেষ্ট?

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ২৩৭ Time View
  • সকাল নারায়ণগঞ্জঃ

 

 

আজকাল অনেককে দেখা যায়, পিতা-মাতাকে গ্রামের বাড়িতে রেখে নিজে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে থাকে। আবার কারো বাবা-মা শহরে থাকলেও নিজে স্ত্রীকে নিয়ে একই শহরে আলাদা বাসায় থাকে।

অনেক আধুনিক ও শিক্ষিত পরিবার তো রীতিমতো বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে একেবারে বৃদ্ধাশ্রমেই রেখে আসে। অবশ্য তাদের অনেকেই নিয়মিত পিতা-মাতার প্রয়োজনীয় খরচাদি যেমন খাবার-দাবার, পোশাক-আশাক, চিকিৎসা ইত্যাদির খরচ পৌঁছে দেয়। কিন্তু তাদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাত এবং তাদের সঙ্গদান করতে পারে না বা করে না।

এখন প্রশ্ন হল, পিতা-মাতার হক আদায়ের ক্ষেত্রে কি শুধু তাদের খরচাদি দেওয়াই যথেষ্ট? নাকি তাদের সাথে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাত করা ও একাকীত্বে তাদের সঙ্গ দেওয়াও সন্তানের জন্য জরুরি?

সন্তানের ওপর পিতা-মাতার হক শুধু তাদের খোরপোষ দেওয়াই নয়। বরং তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা, মাঝে মাঝে দেখা-সাক্ষাত করা, একাকীত্বে তাদের সঙ্গ দেওয়া এবং প্রয়োজনে তাদের খেদমত করাও সন্তানের ওপর তাদের প্রাপ্য হক বা অধিকার।

এজন্য সন্তান পিতা-মাতা থেকে দূরে থাকতে চাইলে তাদের স্বতস্ফূর্ত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। পিতা-মাতার সম্মতি ছাড়া সন্তানের জন্য তাদের থেকে দূরে থাকা জায়েজ নয়।

এসবই আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্দেশিত ‘পিতা মাতার প্রতি সদাচরণ’ এর অন্তর্ভুক্ত।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‌‘আমি মানুষকে আদেশ করেছি তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে।’ (সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৮)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমার পালনকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো, পিতা-মাতার কোনো একজন কিংবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের উফ্ পর্যন্ত বলো না এবং তাদের ধমক দিয়ো না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো।’ (সুরা ইসরা, আয়াত: ২৩)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘অত:পর তোমরা (জিহাদ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলে কি তোমাদের দ্বারা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তার এবং রক্তের আত্মীয়তা ছিন্ন করার সম্ভাবনা আছে? এরাই তারা যাদেরকে আল্লাহ লা’নত করেছেন। ফলে তাদেরকে বধির বানিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২২-২৩)

হাদিস শরীফে এসেছে, বিখ্যাত সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, আমি আল্লাহর কাছে সওয়াবের আশায়, আপনার নিকট জিহাদ ও হিজরতের উপর বায়আত গ্রহণ করতে চাই। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার পিতা-মাতার মধ্যে কেউ জীবিত আছে কি?

উত্তরে লোকটি বলল, হ্যাঁ, উভয়েই জীবিত আছেন। তখন রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি কি আল্লাহর কাছে সওয়াব ও প্রতিদান চাও? সে বলল, হ্যাঁ। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং উত্তমরূপে তাদের সঙ্গ দাও।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৪৯)

সুতরাং পিতা-মাতাকে দূরে রেখে শুধু খরচাদি দেওয়ার দ্বারা তাদের হক আদায় হবে না। তাদের সাথে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাত করতে হবে। তাদের সময় দিতে হবে।

বিশেষত নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে সঙ্গ দিতে হবে। নতুবা তাদের ন্যায্য অধিকার নষ্ট করা হবে। আর বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে আত্মীয়-স্বজনহীন বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা শুধু নাজায়েজই নয়; বরং তা চরম অমানবিক আচরণ এবং জঘন্যতম অন্যায় কাজ। এ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা কর্তব্য।
আল্লাহপাক আমাদেরকে যথাযথভাবে বাবা-মার খেদমত করার তাওফিক দান করুন।

লেখক: উস্তাযুল হাদিস ওয়াল ইফতা, জামেআ হাকীমুল উম্মত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL