ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের অবৈধ রেকারিং, ডাম্পিং, নির্যাতন, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন প্রদান ও চলাচল সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন, সড়ক-মহাসড়কে স্বল্প গতির গাড়ির জন্য পৃথক লেন ও সার্ভিস রোড নির্মাণের দাবিতে আজ দুপুর ১২ টায় রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠক কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সংগ্রাম পরিষদ জেলার সংগঠক খোরশেদ আলম, গাবতলী-পুলিশ লাইন-তাগারপাড় আঞ্চলিক শাখার সদস্যসচিব ফজলুল হক, তল্লা শাখার সদস্যসচিব ই¯্রাফিল রাজ, ফতুল্লা আঞ্চলিক শাখার সংগঠক রঞ্জু প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বল্প দূরত্বে মানুষের বাহন হিসেবে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। রিকশা চালানোর মত প্রচন্ড কায়িক এবং অমানবিক বাহনের বিপরীতে ব্যাটারিচালিত এইসব বাহন যেমন চালকের জন্য কিছুটা আরামদায়ক যাত্রীদের জন্যও সস্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। এটা বায়ু ও শব্দ দূষণ করে না এবং পরিবেশ বান্ধব। ইতিমধ্যেই সে সব ত্রæটি চিহ্নিত করে কিছুটা সংশোধন করা হয়েছে ফলে দূর্ঘটনার হার অন্যান্য বাহনের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। ইতিমধ্যে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট মহাসড়ক ব্যতিত ব্যাটারিচালিত যান চলাচলে বাঁধা নেই বলে মতামত দিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় হওয়ার পরও এখনও ইজিবাইকসহ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে পুলিশ রেকার বিলের নামে ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইক আটকে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা আদায় করছে। এসুযোগে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রও এদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। শোনা যায় কতিপয় দুর্নীতিবাজ পুলিশ ও হলুদ সাংবাদিক পারস্পরিক যোগসাজসে মাসিক টাকার বিনিময়ে কিছু ব্যাটারি রিকশা শহরে চলতে দিচ্ছে। সরকারি নীতিমালা তৈরি না হওয়ায় এ বেআইনি চাদাঁবাজি চলছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজশাহী, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে এবং তাদের নীতিমালা অনুযায়ী শহরে নির্বিঘেœ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক চলছে ও নির্দিষ্ট পরিমাণে কর কর্পোরেশন ও পৌরসভা পাচ্ছে।
এতে দরিদ্র রিকশা চালকদের উপর নির্যাতন ও হয়রানির অবসান হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়র নারায়ণগঞ্জ শহরে দরিদ্র রিকশা চালকদের ও তাদের পরিবারের মানুষদের জীবন বাঁচাতে ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইকের রেজিস্ট্রেশন ও নম্বর প্লেট দিয়ে শহরে চলমান হাজার হাজার ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক চলাচলে একটি শৃংখলা নিয়ে আসতে পারেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে গত ১০ বছর ধরে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়ন, লাইসেন্স প্রদানসহ ৬ দফা দাবিতে ধারাবাহিক ও সুশৃঙ্খল আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত যানবাহনের আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে কোন প্রয়োাজন হলে সহায়তা করতে এবং চালকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়াসহ সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় যে কোন উদ্যোগে অংশ নিতে সংগ্রাম পরিষদ প্রস্তুত।
রেজিস্ট্রেশন ও নীতিমালা প্রণয়ন সেক্টরের লাখ লাখ চালকের জীবনমান উন্নত করতে সহায়তা করবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবন্ধন, রুট পারমিট ও লাইসেন্স দেয়ার ব্যবস্থা চালু হলে সড়কে শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এর ফলে সরকার পাবে রাজস্ব, সড়কে আসবে শৃঙ্খলা আর চালক মালিকরা পাবে স্বস্তি। যার সামগ্রিক ফলাফলে অর্থনীতিতে গতি আসবে, দুর্নীতি-চাঁদাবাজির পথ বন্ধ হবে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নীতিমালা প্রণয়ন করে রিকশা-ইজিবাইকের রুটপারমিট,ঁ রেজিস্ট্রেশন প্রদান ও অবৈধ রেকারিং, ডাম্পিং, চাদাবাজি, নির্যাতন, হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।