সকাল নারায়ণগঞ্জ অনলাইন ডেস্কঃ নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে রেকর্ড ২০৫ রান তাড়া করে ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের দাপুটে জয় পেল খুলনা টাইগার্স। বিপিএল ইতিহাসে এর আগে এত বড় স্কোর তাড়া করে জয় পায়নি কোনো দল। এই জয়ে রাজশাহী রয়েলসকে হটিয়ে বিপিএল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন খুলনা।
তবে পরাজয়ে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন ঢাকা প্লাটুনের। তারা আগেই বিপিএল চলতি সপ্তম আসরের প্লে-অফের খেলা নিশ্চিত করেছে। হেরে যাওয়ায় ঢাকার অবস্থান সেরা চার দলের মধ্যে শেষ পজিশনে।
শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২০৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ঢাকা প্লাটুন। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯১ রান করেন মুমিনুল হক সৌরভ। এ ছাড়া ৬৮ রান করেন মেহেদী হাসান।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভারের ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেসে-খেলেই জয় পায় খুলনা টাইগার্স। দলের জয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। বিপিএল ক্যারিয়ারে প্রথম এবং পঞ্চম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত।
এর আগে বিপিএল ইতিহাসে দেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোহাম্মদ আশরাফুল ও শাহরিয়ার নাফীস সেঞ্চুরি করেছেন।
ঢাকার বিপক্ষে বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে উদ্বোধনীতে ৬.৫ ওভারে ৭০ রানের জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে খুলনার দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রুশোর সঙ্গে গড়েন ৮১ রানের জুটি। ১৭ বলে ২৩ রান করে রুশো আউট হলেও ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন শান্ত।
একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে প্রথম ২৭ বলে ৫০ রান করা শান্ত পরের ২৪ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন। তার ৫৭ বলে আট চার ও দৃষ্টিনন্দন ৭টি ছক্কায় সাজানো ১১৫ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২০৫ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করে ৮ উইকেটের বিশাল জয় পেল পেল খুলনা।
শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫ রানে তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয় ও জাকির আলীর উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায় ঢাকা।
গর্তে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরাতে বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান। চতুর্থ উইকেটে বিপিএল রেকর্ড ১৫৩ রানের জুটিতে বিপর্যয় এড়িয়ে ২০৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ঢাকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ বলে ৯১ রান করেন মুমিনুল। তার ইনিংসটি ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো।
বিপিএল সপ্তম আসরে এটা মুমিনুলের দ্বিতীয় ফিফটি। সবশেষ পাঁচ ম্যাচে ২৪.৬ গড়ে ১২৩ রান করা মুমিনুল এ দিন রীতিমতো ব্যাটিং তাণ্ডব চালান। টেস্ট স্পেশালিস্ট খ্যাত এ ক্রিকেটার যে টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সক্ষমতা রাখেন তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ পেশ করলেন শনিবার।
শুধু মুমিনুলই নন! প্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলেছেন মেহেদী হাসান। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় দলের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাদ পড়ে যাওয়া মেহেদী শনিবার ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। মাত্র ৩৬ বল খেলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১৮৮.৮৮ স্ট্রাইক রেটে ৬৮ রান করেন মেহেদী হাসান। চলতি বিপিএলে এটা তার তৃতীয় ফিফটি। এর আগে ৫৬ ও ৫৯ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।
মুমিনুল আর মেহেদীর ব্যাটিং ঝড়ে দিশেহারা হয়ে যান খুলনা টাইগার্সের তারকা বোলার মোহাম্মদ আমির, রবি ফ্রাঙ্কলিঙ্ক, শফিউল, শহিদুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ২০৫/৪ (মুমিনুল হক ৯১, মেহেদী হাসান ৬৮*)।
খুলনা টাইগার্স: ১৮.১ ওভারে ২০৭/২ (নাজমুল হোসেন শান্ত ১১৫*, মিরাজ ৪৫, রুশো ২৩, মুশফিক ১৮*)।
ফল: খুলনা টাইগার্স ৮ উইকেটে জয়ী।