ফতুল্লায় নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় মুক্তিপন আদায়কারী চক্রের কবল থেকে মোক্তার সর্দার (৩০) নামে এক যুবককে উদ্ধারসহ অপরাধ সংঘটনের কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট জব্দ করে পুলিশ। শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ফতুল্লা থানার শিয়াচর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার জামালপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মৃত কাদের শেখের পুত্র রিয়াজ ও ফতুল্লার শিয়াচর এলাকার রোকসানা সুলতানার ভাড়াটিয়া এবং মুক্তিপন আদায়কারী চক্রের নারী সদস্য মোছা. রুমা বেগম।
মুক্তিপণ চক্রের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোক্তার সর্দার বরিশাল জেলার বরিশাল জেলার হিজলা থানার লক্ষিপুরের সেকান্দার সর্দারের পুত্র ও ঢাকা জেলার দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার খলামুড়া জিয়ানগরীর আলী আহমেদের ভাড়াটিয়া। সে পাগলা ভাসমান রেস্তোরার কর্মচারী।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোক্তার সর্দারের স্ত্রী মোসাঃ নাজমা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছেন।
জানাগেছে, উদ্ধার হওয়া যুবক মোক্তার সর্দার বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে নিজ কর্মস্থল থেকে বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়।
সে তখন তার স্ত্রী কে বাসায় ফোন করে জানায় কিছুক্ষনের মধ্যে বাসায় ফিরে আসবে। কিন্ত সে বাসা না ফিরে তার পূর্ব পরিচিত ব্ল্যাক মেইলিং গ্রুপের সদস্য রুমা বেগমের সাথে শিয়াচর এলাকায় গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজের ভাড়া বাসায় যায়।
সেখানে তারা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হলে সে দৃশ্য জানালার ফুটো দিয়ে মোবাইল ফোনে ধারন করে গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজসহ তার সহোযোগিরা। এক পর্যায়ে রিয়াজ ও তার সহোযোগিরা মুক্তার সর্দার কে ব্ল্যাক মেইলিং করতে শুরু করে। তারা তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে মোক্তারের স্ত্রীর নিকট ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে।
অপরদিকে মোক্তার কে বলে টাকা না দিলে ধারনকৃত ভিডিও ইন্টার নেটে ছড়িয়ে দিবে। এমনকি তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন ও করে। মোক্তার অনেকটাই বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর নিকট ফোন করে ব্ল্যাক মেইলিং চক্রের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার অনুরোধ করে।
মোক্তারের স্ত্রী বিষয়টি থানা পুলিশ কে জানালে পুলিশ মোবাইল ট্রাকিং ও একটি বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরে শিয়াচর এলাকা থেকে মোক্তারকে উদ্ধার সহ গ্রেপ্তার করে মুক্তিপণ চক্রের সদস্য রিয়াজ ও রুমাকে। এ সময় পুলিশ যৌন মিলনের দৃশ্য ধারন করা মোবাইল ফোনটি জব্দ করে।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। অভিযানের সময় মাদক সেবনের বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অর্থ আদায়ের বিষয়টি তারা দীর্ঘদিন করে আসছে। এই চক্রের সাথে কারা কারা জড়িত রয়েছে তাদের কে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।