সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
আজ বাবা দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড.মাহবুবুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের বাবাকে নিয়ে একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন।
রোববার (২১ জুন) দুপুরে তিনি তার নিজ ফেসবুক একাউন্টে এই আবেগঘন পোস্টটি করেন। সকাল নারায়ণগঞ্জ পাঠকের জন্য এড.মাহবুবুর রহমানের পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ আজ বাবা দিবস। গতকাল এক সাংবাদিক বোন ফোন করে বলে ছিল বাবা দিবসে আপনার কিছু বলার আছে কি না।
আমি অকপটে বলে ছিলাম আমার কিছু বলার নেই।কিন্তু সকালে যখন ফেসবুক টা ওপেন করলাম তখন দেখলাম অনেকেই বাবাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর পোষ্ট দিয়েছেন।তখন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলএবং বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল।আমার বাবা পেশায় ছিলেন একজন ডাক্তার এবংবিশিষ্ট সমবায়ী ও সমাজ সেবক।ডাক্তার আব্দুল মতিন বা মতিন ডাক্তার বলে সবাই ডাকতেন।তিনি দীর্ঘ দিন নবীনগর,বান্ছারামপুর,হোমনা উপজেলার লোকজনের একজন প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন।
বিশেষ করে বান্ছারামপুর ছিল আব্বার প্রিয় উপজেলা।বান্ছারামপুর এর এমন কোন গ্রামের কম লোকজনই ছিল আমাদের বাড়িতে এক বেলা খায় নাই।লোকজনকে রাস্তা থেকে ডেকে এনে এক বেলা খাওয়াতে পারলে তিনি খুব আনন্দ পেতেন।সারাটা জীবন তিনি শুধু মানুষের সেবা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।৯০এর দশকে বেশ কয়েটি অসহায় পরিবারের ছেলেকে নিজ খরচে বিদেশ পাঠিয়ে ছিলেন। বর্তমানে ঐ পরিবার গুলি সমাজের প্রতিষ্ঠিত পরিবার।
বাবা জীবিত থাকাবস্হায় বাবার এই সব কর্মকান্ড নিয়ে আমরা খুব বিরক্তবোদ করতাম। আমার মাকে দেখতাম সবসময় শুধু মানুষকে খাবারের জন্য রান্নায় ব্যস্ত থাতেন। এমন দিন য়েত রাত্রি বেলায় ২০/২৫ জন মেহমান এসে হাজির হত তখন গভীর রাত্রে মেহমানদের সেবার কাজে আম্মাকে ব্যস্ত থাকতে হত।
১৯৯৫সালের জুন মাসের ২৭ তারিখে আম্মা যখন অসুস্হ হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী ঐদিনও বাবা নবিনগর উপজেলার ইউ সি সির সভাপতির নির্বাচনে প্রতিধন্ধিতায় ব্যস্ত ছিলেন।আম্মা যখন প্রশ্ন করলেন আব্বাকে সারাদিন তুমি কোথায় ছিলে আব্বা বলে ছিলেন তোমার জন্য ঔষধ আনতে গিয়ে ছিলাম।আম্মা তখন বলেছিলেন আমাকে আর ফাকি দিতে হবে না আমি চলে যাচ্ছি।
আম্মা মারা যাওয়ার পর আব্বা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছিলেন পূর্বের শক্তিতে আর এগুতে পারিনী। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে বাবাও চলে গেলেন।অদম্য শক্তির অধিকারী বাবার কোন কিছুই আমরা পাইনী। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কোন ছেলে মেয়ে থেকে একটি টাকাও নিজের জন্য গ্রহন করেননী। বাবা মারা যাওয়ার পর বাবার অভাবটা এখন খুব মনে পড়ে।পরপারে ভাল থেক বাবা।