সকাল নারায়ণগঞ্জ :
নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বৈশাখী শোভাযাত্রা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ১লা বৈশাখ
আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার, সিও র্যাবসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রার সূচনালগ্নেই ২০ জন শিশুকে তাদের নিজ নিজ ধর্মের পোশাকে সাজিয়ে তুলে ধরা হয় সামাজিক মেলবন্ধন ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ—যেখানে সকল ধর্ম ও সংস্কৃতি একত্রে মিলে গড়ে তোলে এক অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তা।
শোভাযাত্রার বিশেষ আকর্ষণ ছিল একটি সুবিশাল হাতী, যা সকলের নজর কাড়ে। পাশাপাশি ছিল ঘোড়ার গাড়ি, নানা রঙের মুখোশ, ঐতিহ্যবাহী মোটিফ এবং বাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে ধারণ করা প্রায় ৪০টি ভ্যান। এসব ভ্যানে প্রতীকীভাবে তুলে ধরা হয় বাংলার লোকজ ঐতিহ্য ও বাঙালির চিরন্তন সংস্কৃতি।
চাষাড়া কেন্দ্রীয় পৌর শহিদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
পরবর্তীতে দিনব্যাপী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক মনোমুগ্ধকর লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মেলার শুভ সূচনা হয়।
মেলায় প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপিত হয় বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য। দর্শনার্থীদের জন্য ছিল পুতুল নাচ, সাপের খেলা, বানরের খেলা, জাদু প্রদর্শনীসহ নানা রকম লোকজ বিনোদন। এরপর মঞ্চে পরিবেশিত হয় নৃত্যানুষ্ঠান ও লোকজ সংগীত, যা নববর্ষের আনন্দকে করে তোলে আরও প্রাণবন্ত ও অর্থবহ।
সকলের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য; আসুন তা ধারণ করি, সম্প্রতির বাংলাদেশ গড়ি।”
এই আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ যেন ফিরে পেল নিজের শিকড়, নিজের ঐতিহ্যকে—নববর্ষের এমন উদযাপন শুধুই উৎসব নয়, এটি ছিল এক প্রাণের বন্ধন ও সাংস্কৃতিক জাগরণের অনন্য দৃষ্টান্ত।