সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
ঢাকা শহরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় মেট্রোরেল, উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেওয়ে মত প্রকল্প নেয়া হলেও নতুন কোন মাঠ, পার্ক, জলাশয় বা উন্মুক্ত স্থান করার পরিকল্পনা করা হয় না। তার বিপরীতে যেসকল মাঠ-পার্ক উন্মুক্তস্থান রয়েছে তা উন্নয়নের নামে দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের পর্যাপ্ত সুযোগ নেই বললেই চলে।
তাই এলাকার অভ্যন্তরে স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত সড়কে কিছু সময়ের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ করে ছোট পরিসরে শিশুদের খেলাধূলার আয়োজন করে এ সমস্যা কিছুটা সমাধান করা সম্ভব। এক্ষেত্রে সময়োপযোগী সমাধান হিসেবে এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আজ ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, বিকাল ০৩:০০ টায় ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় এবং হেলথব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডা, হোসেন উদ্দীন খান (কালিওয়ালা ঘাট) নবাবগঞ্জ এলাকাবাসি ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে নবাবগঞ্জের ২য় লেনে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড- এর উদ্বোধনী আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনে প্রথম মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডের উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী মো: মকবুল হোসেন। প্রতি শনিবার বিকাল ৩.০০ থেকে ৫.০০ টা পর্যন্ত হোসেন উদ্দীন খান ২য় লেন (কালিওয়ালা ঘাট) নবাবগঞ্জে আয়োজিত মোবাইল প্লেগ্রাউন্ডে ছবি আঁকা, কারুকাজ, দাবা-লুডু-ক্যারাম-দড়ি লাফ-ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
আয়োজনে এলাকার সমাজসেবক মোঃ সেলিম এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ডের সম্মানীত কাউন্সিলর হাজী মো: মকবুল হোসেন। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের ২৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম আজম এবং সমাজসেবক মো: তাজুল ইসলাম।
২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী মো: মকবুল হোসেন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন- নবাবগঞ্জ ২৩ নং ওয়ার্ডস্থ এলাকায় লক্ষাধিক নাগরিকের বসবাস। এই ওয়ার্ডের স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন অবকাঠামো থাকলেও নেই বিনোদনের জন্য খোলা মাঠ ও পার্ক। তাছাড়াও নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দূরের কোন মাঠ-পার্ক বা বিনোদনের স্থানে যেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না। অপরদিকে দূরের বড় বড় মাঠ বা পার্কে যাবার জন্য যথেষ্ট সময় বা সুযোগ হয়ে ওঠে না অনেকেরই। তাই এলাকার অভ্যন্তরে সকল শ্রেণী, পেশা ও বয়সের মানুষের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে মোবাইল প্লেগ্রাউন্ড আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে এ ধরণের কার্যক্রম আয়োজিত হলে নগরবাসী উপকৃত হবেন এবং একটি প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য শহর গড়ে উঠবে।
জিয়াউর রহমান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশিরভাগ ওয়ার্ডে মাঠ, পার্ক নেই। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে স্বল্প সময়ে নতুন কোন মাঠ বা পার্ক তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই এলাকার স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত স্থানগুলোতে সহজেই মোবাইল প্লেগ্রাউন্ডের মতো অস্থায়ী আয়োজনের মাধ্যমে খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের আয়োজন করা যেতে পারে। খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগের অভাবে শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড শিশুদের খেলাধূলার জন্য বিকল্প একটি আয়োজন। আগামী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার লক্ষ্যে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড আয়োজন শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মো: সেলিম আজম বলেন, আমাদের এলাকার শিশুরা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই আয়োজনের ফলে আমাদের শিশুরা একটি সুন্দর খেলাধূলার পরিবেশ পাবে।
মো: তাজুল ইসলাম বলেন, বাড়ির কাছে এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে খেলাধূলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টি হলে শিশু, নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসগ সকলেই উপকৃত হবেন। মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডের কোন স্থায়ী অবকাঠামো না থাকায় এলাকার অভ্যন্তরে বাসার সামনের রাস্তায় সপ্তাহে একদিন বা প্রতিদিন আয়োজন করা সম্ভব। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি আমার পক্ষ থেকে সাধ্যমত চেষ্টা করবো নিয়মিত এই আয়োজনটি আয়োজনে।