মোবাইল আসক্তিতে বাধাঁ দেয়ায় রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে শিশু নিখোঁজ”
অভিমানে মা-বাবার পরিচয় গোপন করে দীর্ঘ ০৪ (চার) মাস বিভিন্ন জনের আশ্রয়ে দিনযাপন” নিখোঁজ শিশু রাইমুল হাসান@সাইম (১২) উদ্ধার”
সূত্রঃ বন্দর থানার জিডি নং- ৭০৪, তারিখ- ১৫/১০/২০২২ খ্রিঃ।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ বন্দর থানা এলাকার গার্মেন্টস এর সিকিউরিটি গার্ড মোঃ রবিউল ইসলাম (৩৯), পিতা- মৃত সিদ্দিক, সাং- মুরাদপুর, মদনপুর, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ সাধারণ ডায়রীর মাধ্যমে জানায় যে, গত ১৪/১০/২০২২ খ্রিঃ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:০০ ঘটিকায় বাদীর ছেলে রাইমুল হাসান@সাইম (১২) স্থানীয় দোকানে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বাদীর ছেলে বাসায় না ফেরায় বাদীসহ তার আত্নীয়-স্বজনরা সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোজাঁখুজি করেন।
কিন্তু ভিকটিমের কোন খোজঁ না পেয়ে ভিকটিমের বাবা বন্দর থানায় নিখোঁজ ডায়রী করার আবেদন করেন যার বন্দর থানার সাধারণ ডায়রী নং-৭০৪, তারিখ- ১৫/১০/২০২২ খ্রিঃ। ভিকটিমের পিতা মোঃ রবিউল ইসলাম উক্ত ডায়রীটি থানায় রুজু করার পরে দীর্ঘ ০৩ (তিন) মাস অতিবাহিত হলেও তার ছেলেকে ফিরে না পেয়ে ভিকটিমকে উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ সুপার পিবিআই নারায়ণগঞ্জ মহোদয়ের শরনাপন্ন হয়। পুলিশ সুপার পিবিআই নারায়ণগঞ্জ মহোদয় সাধারণ ডায়রীটির আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এস.আই (নিঃ) মোঃ মাজহারুল ইসলাম কে দায়িত্ব প্রদান করেন। এস.আই (নিঃ) মোঃ মাজহারুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহন করে সংঙ্গীয় এস.আই(নিঃ) শাকিল হোসেন এবং এস.আই (নিঃ) কামরুল হাসান কে নিয়ে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে তদন্ত করেন।
তদন্তকালে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ, স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের ছবি প্রচারসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ প্রায় ০৪ (চার) মাস পর ভিকটিমের অবস্থান সনাক্ত হলে এস.আই (নিঃ) মাজহারুল ইসলাম এবং এস.আই (নিঃ) কামরুল হাসান সহ পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি চৌকস টিম তাৎক্ষনিক ভিত্তিতে ডিএমপি, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার শনির আখড়া, গোবিন্দপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর শিশু ভিকটিম রাইমুল হাসান@সাইম (১২) কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোবাইলে গেমস খেলা, কার্টুন দেখাসহ মোবাইল কেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি তার তীব্র আকর্ষণ রয়েছে।
ভিকটিমের বাবা কাজে যাওয়ার সময় ভিকটিম প্রায়ই তার বাবার মোবাইল বাসায় রেখে গেমস খেলার জন্য বায়না ধরত। ভিকটিমের বাবা ভিকটিমকে মোবাইলে গেমস খেলার জন্য প্রায়ই বকাঝঁকা করত এবং বাসায় মোবাইল রেখে যেত না। এর ফলে শিশু ভিকটিম রাইমুল হাসান@সাইম (১২) এর মনে প্রচন্ড অভিমানের সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে গত ১৪/১০/২০২২ খ্রিঃ বিকেলে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ভিকটিম রাইমুল হাসান@সাইম (১৩) রাস্তা ঘাট তেমন না চেনায় একপর্যায়ে পায়ে হেটে কাচঁপুর এবং পরবর্তিতে বাসে করে শনির আখড়া এলাকায় এসে পৌছাঁয়।
শনির আখড়ার গোবিন্দপুর এলাকায় এসে ভিকটিম স্থানীয় লোকজনকে জানায় তার বাবা-মা মারা গেছেন এবং তাদেও আশ্রয়ে থেকে কখনো হোটেল কখনো মুদি দোকন এবং কখনো ব্যাগের কারখানায় কাজ করে। পরবর্তিতে উক্ত এলাকায় বিভিন্ন লোকের আশ্রয়ে থেকে দীর্ঘ প্রায় ০৪ (চার) মাস অতিবাহিত করার পর ভিকটিম রাইমুল হাসান@সাইম (১৩) কে সর্বশেষ শনির আখড়ার গোবিন্দপুর এলাকার জনৈক শফিকুল ইসলামের আশ্রয় হতে উদ্ধারপূর্বক তার পিতা মাতার নিকট হস্তান্তর করা হয়।