বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম জোটের সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবুু নাঈম খান বিপ্লব, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদ, সিপিবির নেতা বিমল কান্তি দাস, বাসদ নেতা সাইফুল ইসলাম শরীফ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত সরকার তখন আবার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। গতকাল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিইআরসি গণশুনানি করেছে।
কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের দাম ২০ থেকে ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় দাম ৭.১৩ টাকা। বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ১৫.৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। গণশুনানিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিদ্যুৎ-জ¦ালানির দাম বাড়লে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এসময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে নিত্যপণ্যের দাম আরেকদফা বাড়বে। জিনিসপত্রের দাম বহু আগেই সাধারণ মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে গেছে। আবার বৃদ্ধি মানুষের জীবনকে পর্যুদস্ত করে দিবে। বাস্তবে বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অপচয় বন্ধ করা গেলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোন প্রয়োজন নেই।
বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সরকারের উচিত দাম কমানোর ব্যবস্থা করা। সেখানে এসময়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিকে আরও উসকে দিবে। এক্ষেত্রে সরকার জনসাধারণের সংকটের কথা বিবেচনায় না নিয়ে দুর্নীতিবাজ, মুনাফাখোর, লুটপাটকারীদের স্বার্থ রক্ষা করছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা রক্ষা করেছিল। ২০১৮ সালের রাতের বেলায় প্রশাসনের সহায়তায় ব্যালট বাক্স পুরে আওয়ামী লীগ পুনর্বার ক্ষমতায় এসেছিল। যেহেতু বর্তমান সরকার জনগণের রায়ে ক্ষমতায় আসেনি, ফলে জনগণের উপর চরম ফ্যাসিবাদী শাসন চাপিয়ে দেশ পরিচালনা করছে।
বিরোধী মত-পথকে দমন করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন জারি করেছে। গুম, খুন, হত্যা, দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের দেশের ৫০ বছরের ইতিহাস থেকে আমরা জানি দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। সরকার কারচুপির মাধ্যমে আরেকবার ক্ষমতায় আসার জন্য নীলনকশা তৈরি করছে। জনগণের কোন আস্থা এ সরকারের উপর নেই। ফলে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।