নারায়ণগঞ্জ মর্গান স্কুলের ১০ম শ্রেণির সেই মেধাবী ছাত্রী সূচনা দাস নিতুর উচ্চ শিক্ষার সকল দায়িত্ব নিয়েছেন গাজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নগদ ৫ লাখ টাকার চেক নিতুর বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন। এসময় নিতুর স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা লায়লার বিচার দাবি করেন এবং আর কোন শিক্ষার্থী যেন এমন নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার না হোন এ মর্মেম সকলের কাছে আহবান জানান।
এসময় জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি. এম. আরাফাত, সূচনা দাস নিতুর বাবা জুবরাজ রানী দাস, মা পারুল রানী দাস প্রমুখ।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে এস এস সি পরীক্ষার্থী নিতু দাসকে বিশেষ ক্লাসের ৬ হাজার টাকা বেতন দিতে না পারায় টেস্ট পরীক্ষা(ভূগোল) চলাকালীন হল থেকে বের করে ৪০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা লায়লা। নিতু রোলং নং ছিল-৩। বিশেষ ক্লাসের বেতন দিতে না পারায় নিতুকে তিন ভূগোলসহ তিন বিষয়ে ফেল করিয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে নিতু প্রতিবাদ জানিয়ে স্কুলে গিয়ে পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষিকা লায়লা সেই খাতা দেখাতে বাধ্য না এবং নিতুকে এস এস সি পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে নিতু কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ফেসবুকে নিজের শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে দিতে আকুতি জানায়। নিতুর সেই কান্নার ভিডিও ১৬ লাখ ভিউ হয় এবং ৩৩ হাজার শেয়ার হয়ে ভাইরাল হয়ে যায়। এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জরুল হাফিজ এ বিষয়ে তদন্ত কমটি গঠন করে নিতুকে পরীক্ষা দেয়া ব্যবস্থার আশ^াস দেন। একই সাথে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, নারায়ণগঞ্জ শিক্ষা অফিস থেকে আলাদা কমিটি গঠিত হয়।
এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষার্থী নিতু জানান, আমি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নই। আমি চাই অনিয়মটা বন্ধ হোক। সুষ্ঠ তদন্ত হোক। যাতে দোষীরা ছাড় না পায়। ৫ লাখ টাকার চেক পেয়ে আমি শিক্ষা জীবটা সুন্দরভাবে যেন গড়তে পারি এ জন্য গাজী গ্রুপকে ধন্যবাদ।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, সূচনার ক্ষেত্রে এটা একটা তার জীবনের সূচনা হলো। জীবনের একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। নতুন একটা শিক্ষা হলো। সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাই, আজকে আমরা সূচনার পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। যদি এরকম কোনো ঘটনা আপনাদের কানে আসে তাৎক্ষনিক আমাদের জানাবেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, নিতুর পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আর ওই স্কুলের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটির তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা কিছু অনিয়ম পেয়েছি।