নারায়ণগঞ্জে হকার ইস্যুর নেপথ্যে রয়েছে কোটি টাকার চাঁদাবাজি। আর এই চাঁদার টাকার ভাগ যায় হকার নেতা, অসাধু পুলিশ, কথিত রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী পকেটে। ফলে কখনই স্থায়ীভাবে ফুটপাথ হকারমুক্ত হয়নি। বছরের পর বছর ধরে উচ্ছেদের নামে চলে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। সিটি করপোরেশন সকালে উচ্ছেদ করলে বিকালে যেই সেই। আবার যে যার মতো বসে পড়ে।
চাঁদা ভোগকারীদের সহযোগিতা থাকায় হকাররা কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই ফুটপাথ দখল করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। যদিও জরুরি অবস্থার সময় নাসিক ফুটপাথ হকারমুক্ত রাখতে চাষাঢ়ায় হকার্স মার্কেট করে দিয়ে পৌনে ৭শ’ হকারকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। কিন্তু আবার ফুটপাথ হকারে ভরে যায়। দিন দিন এই সংখ্যা বাড়তে থাকে।
সোনালী ব্যাংকের সামনে পিঠার দোকান,বটের দোকান ও অবৈধ সিএনজি,মিশুক,অটোর কারনে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে অথচ পুলিশের গাড়ি অইখানে থাকার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে দেখা যায়না।
চাষাড়া শহীদ মিনারের আশেপাশে ১০জনের একটি ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট রয়েছে। ছবিতে উল্লেখিত নারীরা একাধিকবার গ্রেফতার হওয়ার পরও জামিনে বের হয়ে আবার এই কাজে লিপ্ত হন।
কোনো কোনো জায়গায় দোকানের সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ ভিক্ষুক ও টোকাইদের উপদ্রবও অতিষ্ঠ করে পথচারীদের। প্রায় সব এলাকায় দিনের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতগুলো হকার ও ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যায়। এলাকাভেদে রাত ১০টা বা ১১টা পর্যন্ত তাদের দখলেই থাকে ফুটপাত। পথচারীরা ফুটপাতে ফেরার আগেই আবারও হকারদের দখলেই চলে যায় ফুটপাত।
ব্যাংকের সামনে পিঠার দোকান, বটের দোকান ও অবৈধ মিশুক,অটো স্ট্যান্ডের ফলে যানজট সৃষ্টি হলে কিছু মহিলা ও পুরুষ পকেটমার ধাক্কাধাক্কি করে এক পর্যায়ে ব্যাগ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে মোবাইল,টাকাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
দীর্ঘদিন যাবৎ এই ছিনতাই চক্রটি রাস্তা পারাপারের সময় যানজটের ভিতরে সাধারন জনগনের ব্যাগ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে মোবাইল,টাকা।
সরেজমিন শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, শহরের চাষাঢ়া গোল চত্বরের চারপাশ এবং শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া থেকে মন্ডলপাড়া পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে প্রধানত সবচেয়ে বেশি হকার বসে। এছাড়া শহীদ মিনার, শায়েস্তা খান সড়ক, চেম্বার রোড, ২নং রেল থেকে ১ নং গেইট, ১ নং গেইট থেকে কালিরবাজার, কালিবাজার থেকে ব্যাংকের মোড়, লুৎফা টাওয়ার গলি, প্রেসিডেন্ট রোড গলিতে ফুটপাথ দখল করে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসে হকার। এই সব স্থানে প্রায় দেড় হাজার দোকান। এর মধ্যে স্থায়ীভাবে ৫ শতাধিক। যারা কখনো উচ্ছেদের কবলে পড়ে না। বেশিরভাগ সময় উচ্ছেদের শিকার হয় বঙ্গবন্ধু সড়কের দুইপাশের ফুটপাথের দোকানীরা। এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ আবার অস্থায়ী। কেউ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেউ শুধু বিকালে কেউ বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসে। কিন্তু চাঁদা দিতে হয় সবাইকে সমানতালে। ফুটপাথের এই সব দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা হয়। তবে দোকান বুঝে বা ব্যবসার ধরন বুঝে দৈনিক সর্বনিম্ন ৯০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলা হয়।