দেশের অন্যান্য স্থানের মতো নারায়ণগঞ্জেও জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশায় ঢাকা আকাশে দিনের বেলায় সূর্যের আলোর দেখা মিলছে অনেক দেরিতে।রাতের বেলায় তাপমাত্রা নেমে যায় ১৭ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এদিকে কনকনে শীতে নগরের ফুটপাতসহ অন্যান্য স্থানে গরম কাপড়ের ব্যবসাও জমে উঠছে।প্রতি বছর শীতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন ফুটপাত থেকে গরম কাপড় সংগ্রহ করেন। ১৩ ভাদ্র শীতের জন্ম হলেও এবার তা এসেছে অনেক বিলম্বে পৌষের শুরুতে। এ কারণে নগরে এখন গরম কাপড় কেনার ধুম পড়েছে।
শীতকে ঘিরে শহরের ডিআইটি মার্কেট, কালির বাজার, লঞ্চ টার্মিনালের আশেপাশের মার্কেট, দুই নাম্বার রেলগেইটের আশেপাশের ফুটপাত , চাষাঢ়া মার্কেট গুলিতে ও মার্কেটের সামনের ফুটপাত এবং বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা এবং বিপণি-বিতানের সামনে হকাররা নানা রকমের শীতের কাপড়ের সাজিয়ে বসেছেন। সেখানে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড়, বয়স্কদের সোয়েটার, ব্লেজার, মাফলারসহ নানা ধরন ও মানের শীতের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বাহিরের শহর গুলির অভিজাত মার্কেটগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতেও সমানতালে চলছে গরম কাপড়ের বিকিকিনি। নগরীর বাহিরের শহর গুলির মধ্যে অন্যতম শীতের পোশাক বিক্রির স্থান গুলি হলো, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, ফতুল্লা, সিদ্দিরগঞ্জ, সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, রুপগঞ্জ, বন্দরের মার্কেট ও মার্কেটের সামনের ফুটপাত। সস্তায় গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত লোকজন সেখানে ভিড় করছেন। প্রতি বছর শীতের আগমনকে ঘিরে নগরীতে মৌসুমি হকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এ সময় বাড়তি আয়ের আশায় তারা ফুটপাতের পাশাপাশি ফেরি করে নগরীর অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন।
একসময় নগরের হকার্স মার্কেটেই শীতের কাপড় বিক্রি হতো। পরে তা বিভিন্ন মার্কেট থেকে ফুটপাত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। দরিদ্রদের বেশিরভাগ ফুটপাত থেকেই শীতের কাপড় সংগ্রহ করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছর প্রত্যাশিত শীত না পড়ায় তেমন বেচাকেনা হয়নি। অনেকে শীতের কাপড় কিনে মজুদ করলেও তা বিক্রি করতে পারেননি। এ বছরও শুরুতে শীতের দেখা মেলেনি। পসরা সাজিয়ে বসে থেকেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তবে, গত দুইদিনে শীত বাড়ায় ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। সব বয়সের মানুষের শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতে। দামও নাগালের মধ্যে থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছে তারা।
নগরীর ফুটপাতগুলো এখন আগের তুলনায় অনেক পরিপাটি। নির্ধারিত সময়ে পসরা নিয়ে বসছেন হকাররা। এ কারণে কোনোরকম জঞ্জাল ছাড়াই চলছে কেনা-বেচা। শীত আরও বাড়লে ফুটপাতের কেনা-বেচা আরও জমজমাট হবে।
গরম কাপড় কিনতে আসা সুফিয়া জানান, তিনি আয়ার কাজ করেন। পরিবারে শিশু থেকে শুরু করে ৭ সদস্যের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছেন। ফুটপাতে সস্তায় ৫ জনের গরম কাপড় কিনেছেন। বাকিদের জন্যও কাপড় পছন্দ করছেন।
রাবেয়া বেগম নাম আরেক নারী জানান, তিনি কম টাকায় শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন। ফুটপাতে গরম কাপড়ের দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় সবাইকে কিনে দিতে পারছেন।
সোনারগাঁয়ের ফুটপাতের বিক্রেতা ফয়সাল জানান, শীত মৌসুম এলেই তিনি গরম কাপড়ের ব্যবসায় নামেন।আর এসব গরম কাপড়ের চালান আনেন চট্টগ্রাম থেকে।