মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি ও গণসংগীত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের সামনে এ আলোচনা সভা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি ও গণসংগীত অনুষ্ঠিত হয়।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক প্রদীপ সরকারের সভাপতিত্বে এবং প্রগতি লেখক সংঘের সাধারন সম্পাদক বিমল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আলোচনা করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিখিল দাস, প্রগতি লেখক সংঘের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাকির হোসেন, শ. ম. কামাল হোসেন, জামাল হোসেন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাকিস্তানী প্রায় উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে লাল সবুজের পতাকা খচিত রক্তস্নাত বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে আমরা এক বিবর্ণ বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি।
স্বাধীনতার চার মূলনীতি সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ-জাতীয়তাবাদের সাথে রাষ্ট্রধর্মও রেখেছে বর্তমান সরকার। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য-মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার আজ ভুলুন্ঠিত। একদিকে দিন দিন কোটিপতি বাড়ছে আরেক দিকে বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা।
চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা, অথচ তাদের আয় বাড়েনি। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে পুঁজিপতিরা বিদেশে পাচার করছে। সরকার এদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নিতে পারছে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আজ হারিয়ে গেছে। হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘর, মন্দিরে হামলা, আগুন দেয়া হচ্ছে। কোন বিচার হচ্ছে না।
মানুষের নেই কোন মানবিক মর্যাদা। আমরা পাকিস্তানী নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম অথচ আজ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকদের জেলে পুড়েছে, নির্যাতন করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতা আমরা ভুখন্ডগত ভাবে পেয়েছি তবে অর্থনৈতিক মুক্তি আমাদের আসেনি। তাই আজ মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীভূত চেতনা শোষনহীন সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণের পরিপূরক সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শ্রেণী সংগ্রামকে বিকশিত করে মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি টানতে হবে সমাজতান্ত্রিক ব্যাবস্থা নির্মাণের মধ্য দিয়ে।