সকাল নারায়ণগঞ্জ অনলাইন ডেস্কঃ আজকের শিশুই গড়বে সুন্দর আগামী। আজকের শিশুটি সুন্দরভাবে গড়ে উঠলেই আমরা পাব নির্মল পবিত্র ভবিষ্যৎ। পাব অনুপম সোনালি প্রজন্ম। আর এ কারণেই ইসলাম শিশুর যত্নের প্রতি বিশেষ নজর দিতে বলেছে।
একই কারণে তার খাদ্যের প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখতে অভিভাবকের প্রতি তাগিদ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে মায়ের দুধের গুরুত্ব অপরিসীম। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে’ (সূরা বাকারা, ২৩৩)।
কোরআনে আরও বলা হয়েছে, মা তার সন্তানকে কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করে। এরপর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে (সূরা লুকমান, ১৪)। সূরা আহকাফে শিশুর গর্ভকালীন সময়সহ বলা হয়েছে, তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও দুধ ছাড়াতে লাগে ত্রিশ মাস (সূরা আহকাফ, ১৫)।
মায়ের বুকের দুধ হচ্ছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানযুক্ত আল্লাহ প্রদত্ত এমন গায়েবি খাবার যা শিশু সহজেই হজম করতে পারে এবং শিশুর শরীর সহজেই কাজে লাগিয়ে দেহের বৃদ্ধি ঘটিয়ে থাকে। আজকের চিকিৎসাবিজ্ঞান শিশুকে মাতৃদুগ্ধ দানের ব্যাপারে যে গুরুত্বের কথা বলছে, সে গুরুত্বের কথা ইসলাম আজ থেকে চৌদ্দশ বছর আগেই ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি মাতৃদুগ্ধ সংরক্ষণের জন্য ‘হিউম্যান মিল্কব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি শিশু জন্মের সময় যার ওজন কম ছিল বা যে শিশু মায়ের পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছেন না, সে ক্ষেত্রে অন্য মায়ের দুধ শিশুর জন্য সহজপ্রাপ্য করাই এর মৌলিক উদ্দেশ্য। তাদের দাবি অনেক শিশু জন্মের সময় যে শিশুর মা মারা যান, অনেক শিশুর বাবা-মা তাদের ফেলে রেখে যায়। তাদের জন্য মাতৃদুগ্ধের ব্যবস্থা করা কঠিন।
আবার অনেকের শিশুকে দেয়া দুধ অতিরিক্ত হয়, যা নষ্ট হয়ে থাকে। এ দু’পক্ষের মাঝে মধ্যস্থতা করতেই মিল্কব্যাংকের জন্ম। তবে ২০০৫ সালে ওয়াশিংটনে একটি ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেসে ‘ইন্টারন্যাশনাল মিল্কব্যাংকিং ইনিশিয়েটিভ’ বা ওগইও যাত্রা শুরু করে।
নবজাতক শিশুর প্রতি প্রতিটি মানুষেরই প্রকৃতিগত মায়া-মমতা রয়েছে। বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, তোমরা শিশুদের ভালোবাস এবং তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন কর (বুখারি ও মুসলিম)। ইসলাম নিজের শিশুকে দুধ পান করানোর পাশাপাশি অন্যের শিশুকে দুধ পান করানোকে সম্মানজনক দৃষ্টিতে দেখে। রাসূল (সা.)-এর জন্মের সময় আরবদের সংস্কৃতি ছিল দুগ্ধপানের জন্য দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেয়া।