সকাল নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগীরা হাসপাতালে পৌছার পুর্বেই তাদের কাছে গিয়ে তাদের সাথে কথাবার্তা বলে জরুরী বিভাগে গিয়ে কোন মতে ডাক্তার দ্বারা ঔষধ লিখানোর পর দালালরা তাদের পছন্দ মত প্রাইভেট হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে নিয়ে যায়। ওইসব ক্লিনিকের মালিক ও ফার্মেসির মালিকরাও দালালদের জন্য রোগীদের স্লিপ থেকে টাকা আদায় করে রাখে। দিন শেষে দালালরা তাদের পাওনা বুঝে নেয়।
হাসপাতালের কিছু আসাধু ডাক্তার ও আত্মীয়দের যোগসাজশে বেশ কিছু প্রাইভেট ক্লিনিক ও ফার্মেসী গড়ে উঠেছে। দালালরা প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে পরিক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। আর এ সুযোগে ক্লিনিকের মালিকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন পরিক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা।
দালালরা শুধু ক্লিনিকে নয় ঔষধের জন্য নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ফার্মেসীতে। আর ফার্মেসী গুলোর রয়েছে একাধিক দালাল। তারা তাদের ফার্মেসীর ঔষধ বেশি বেচাকেনার জন্য নিজস্ব দালাল নিয়োগ দিয়ে থাকে। দালালরা সারাদিন হাসপাতালের ভেতরে থাকে এবং ওইসব ডাক্তার, যখন দায়িত্বে থাকে তখন তারা তাদের নিযুক্ত দালালদের ইচ্ছে মত ব্যবহার করে থাকে এবং রোগীদের তাদের ফার্মেসিতে পাঠিয়ে দেয়। হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেলেও এ যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে এসে আউটডোরে টিকিট কেটে ডাক্তার দেখিয়েছেন নাসরিন নামের এক রোগী। এতে ডাক্তার ওই রোগীকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পরামর্শ দেন। বাইরে বেরুতেই দালালের খপ্পরে পড়েন তিনি। পরে একে একে কয়েকজন দালাল ওই রোগীকে তাদের ক্লিনিকে নিতে চেষ্টা করছে। কিন্তু রোগী কোনো পরীক্ষা করাবেন না জানালে দালালরা ভিন্ন রোগীর খোঁজে স্থান ত্যাগ করে। এমন চিত্র পুরো হাসপাতালজুড়েই দেখা গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসক দেখাতে আসা রোগী ইশরাত জাহান জানান, চিকিৎসক দেখিয়ে চেম্বারের বাইরে আসতেই এক নারী এগিয়ে আসে। এ সময় তিনি বলেন, হাসপাতালেতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় না। তাই আসুন, বাইরে থেকে কম টাকায় পরীক্ষা করিয়ে দিই।
রোগীরা জানান, দালালরা হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকার কথা বলে ক্লিনিকে যেতে বলে। এতে বাড়তি টাকার পাশাপাশি নামসর্বস্ব পরীক্ষায় প্রতারিত হতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লিনিকের এক নারী দালাল জানায়, হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকায় রোগী তেমন পাওয়া যায় না। একজন রোগী নিতে পারলে কিছু কমিশন পাওয়া যায়। এতে দুপুর পর্যন্ত কয়েকজন রোগী ক্লিনিকে নিতে পারলে তিন-চারশো টাকা পাওয়া যায়।