নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে যাত্রাপালার অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির সময় ধাক্কার শিকার হয়ে হারিস সরকার (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
ধাক্কার শিকার হয়ে তিনি বাড়ি যাওয়ার পথে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এসময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৯ নভেম্বর) মধ্যরাতে উপজেলার মেঘনাবেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়াচর গ্রামে।
নিহত হারিস সরকার ওই এলাকার আলমাছ সরকারের ছেলে। তবে এক পক্ষ দাবী করেছেন ধস্তাধস্তির কোন ঘটনাটি ঘটেনি। হারেস হার্ট এ্যাটাক করে মারা গেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার খালিয়ার চর পশ্চিমপাড়া অহিদের বাড়িতে বুধবার রাতে যাত্রাপালার আয়োজন করে স্থানীয় মনির হোসেন, আহসানউল্লাহ, ইউসুফ ও তার সহযোগিরা।
যাত্রাপালার মাঝে বক্তব্য দেওয়ার সময় মনির পক্ষের লোকজন সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম স্বপনের নাম উচ্চারন করেন। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান ফাইজুল হক ডালিমের নাম উচ্চারণ করেননি। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী মনিরের পক্ষের লোকজনের সাথে ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোকন সরকারের লোকজনের মধ্যে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটনা ঘটে।
ধস্তাধস্তির সময় ধাক্কা ধাক্কির শিকার হন খোকন সরকারের ভাতিজা হারিস সরকার। পরে বাড়ি যাওয়ার পথে অজ্ঞান হয়ে সড়কে পড়ে যান হারিস সরকার। সেখান থেকে তাকে মেঘনা নদী দিয়ে ট্রলারে কুমিল্লার মেঘনা থানার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে খোকন সরকার সরকার বলেন, মনিরের লোকজন তার ভাতিজা হারিস সরকারকে ব্যাপকভাবে কিল ঘুষি মারে। এতে সে আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা গেছে। তিনি ঘটনাটিকে হত্যা বলে দাবী করে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
তবে মনিরের পক্ষের লোক আহসানউল্লাহ জানান, স্থানীয় যুবকরা মিলে বুধবার রাতে একটি মঞ্চ নাটকের আয়োজন করে। সেখানে কোন ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেনি। হারিস সরকার আগে থেকেই অসুস্থ ছিলো। নাটক দেখে বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার সময় সড়কে হাট এ্যাটাকে তিনি মারা যান। কিন্তু প্রতিহিংসার বশবতি হয়ে খোকন মেম্বার এ ঘটনাটিকে অন্যদিকে মোড় নেয়ার অপচেষ্টা করছেন বলে তিনি দাবী করেন।
এদিকে আড়াইহাজার থানার ওসি আজিজুল হক হাওলাদার জানান, খালিয়াচরে মঞ্চ নাটকে নাম বলা না বলা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্ত্ধাস্তির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে এক পক্ষের লোক হারিস সরকার। সে বাড়ি যাওয়ার পথে সড়কে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।
পরে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে কুমিল্লা মর্গে ময়নাতদন্তের পর নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হারিস সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে নাকি হত্যা করা হয়েছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে তা পরিস্কার জানা যাবে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।