নারায়ণগগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাটারি চালিত রিকশা ও অটোরিকশা গ্যারেজগুলোতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে যেকারণে কিছুদিন পর পর ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ বিল বাড়ানো হচ্ছে। আর সেই বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের টাকা গুণে সেই ক্ষেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। আর অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে পকেট ভারী হচ্ছে অসাধুদের।
জানা গেছে, ‘এসব গ্যারেজে ব্যাটারি চার্জ দিতে গিয়ে অনেক বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। যে কারণে গ্যারেজ মালিকরা খরচ কমিয়ে বাড়তি টাকা আয়ের জন্য অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে থাকে। তবে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার পেছনে একদল অসাধু কর্মকর্তাদের হাত থাকে। কেননা এসব শুধুমাত্র গ্যারেজ মালিকদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। অন্যদিকে অসাধু কর্মকর্তারা গ্যারেজ মালিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সহয়োগিতা করে। আর গ্যারেজ মালিকরাও অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বাড়তি টাকা আয় করে যাচ্ছে। এভাবেই বিদ্যুত খাতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে । আর এই ভর্তুকির ফলশ্রুতিতে সরকার দফায় দফায় ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। এতে করে জনসাধারণ এই ক্ষতিপূরণ করে যাচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাধারণত একটি ইজিবাইকের জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন। আর প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৯০০ থেকে ১১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট (দিনে বা রাতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা) বিদ্যুৎ খরচ হয়। সে হিসেবে জেলার প্রায় ৫০ হাজার ইজি বাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জের জন্য জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫৫ মেগাওয়াট এবং মাসে ১৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু ৮০ ভাগ গ্যারেজে চুরি করে ও লুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব ব্যাটারি রিচার্জ করায় সরকার প্রায় ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা,হাজীগঞ্জ,মাসদাইর,চাষাঢ়া,তল্লা,খানপুর,কাশিপুর,বাবুরাইল,দেওভোগ,নিতাইগঞ্জ,ভূইঘর,জিমখানা সহ প্রায় প্রতিটি এলাকায় রয়েছে কয়েকশ অটো রিক্সা ও মিশুকের গ্যারেজ যা নাকি সম্পূর্ন চোরাইকৃত বিদুৎ ব্যবহার করে চার্জ দেয়া হচ্ছে।
তবে ভাড়া অন্যান্য যানের চেয়ে তুলনামূলক কম হওয়ার কারণে মূল শহরে এবং তার বাইরে এখন যাত্রীদের প্রধান বাহনে পরিণত হয়েছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশা। আর এগুলোর বেশিরভাগ চালকই সামান্য অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক লাইন থেকে গাড়িগুলোতে চার্জ করিয়ে নিচ্ছেন। তারা এই গাড়িগুলো যে গ্যারেজে রাখছেন সে জায়গা থেকেই রাতভর একটি গাড়ির শুধুমাত্র চার্জের জন্য গ্যারেজ মালিককে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে দিচ্ছেন।