সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের কোবাগা এলাকায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি শিল্পকারখানার বিষক্ত, বর্জ্য ও ক্যামিকেলের গন্ধে ওই এলাকার কয়েকশত মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
ফলে কারখানাটি স্থানান্তরের দাবিতে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই এলাকার কয়েকশত নারী পুরুষ একত্র হয়ে ওই শিল্প কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
আগামী এক মাসের মধ্যে কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তর করা না হলে বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া এলাকাবাসীরা ঘোষনা দেন।
কোবাগা এলাকার বাসিন্দা রাখাল দাস জানান, ওই এলাকায় সিগমা অয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের আশ পাশ এলাকায় কয়েকশত পরিবার বসবাস করে আসছে। তাদের শিল্পকারখানার বিষক্ত বর্জ্য ও ক্যামিকেলের গন্ধে আমরা একপ্রকার অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।
ওই কারখানার ব্যবস্থাপক সঞ্জিৎ মন্ডল ও তার সহযোগিরা ক্ষমতার অবব্যবহার করে ঘনবশতিপূর্ণ এলাকায় কারখানা পরিচালনা করছেন। আমরা প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা ও হামলাসহ আমাদের বিভিন্ন ভাবে ভয় ভিতি দেখানো হয়। তাই কারখানাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
রাখাল দাস বলেন, শিল্প কারখানা নির্মাণ করতে হলে যে ধরনের নীতিমালা মালিক পক্ষকে মানতে হয় তার কোনটাই মানছেন না। সিগমা ওয়েল মিলের মালিক। তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই আমাদেরকে জিম্মি করে জোড় পূর্বক কারখানাটি পরিচালনা করছেন। আমরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহজ পাচ্ছি না।
গীতা মন্ডল জানান, একটি ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় পরিবেশে ছাড় পত্র ছাড়া কিভাবে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাদের শক্তিশালী জেনারেটরের শব্দে আমরা ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। তাই অভিলম্ভে এই কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
সোনারগাঁও আইডিয়াল স্কুলের ২য় বর্ষের ছাত্রী জয়ন্তিরানি দাস জানান, তাদের কারখানার জেনারেটরের প্রচন্ড শব্দে আমাদের লেখাপড়ার খুব সমস্যা হয়। তাই কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা জানান, আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়েছে। আমি তাদের কর্মকান্ডে বাধা দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে সিগমা ওয়েল মিলের ব্যবস্থাপক রঞ্জিৎ মন্ডলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি কোণ ভাবেই লাইসেন্স নবায়ন করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন এলাকাবাসীর বসবাসের সমস্যা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌফিক এলাহী জানান, একটি আবাসিক এলাকায় কিভাবে মবিল কারখানা গড়ে উঠেছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মালিক পক্ষ সঠিক কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে মোবইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।