সোনারগাঁয়ে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউরিয়া সার, জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, লোডশেডিং বন্ধ ও দ্রব্যমূল্যেও দাম কমানোর দাবিতে সোনারগাঁ উপজেলা শাখার উদ্যোগে রবিবার (২৮ আগষ্ট) এ সমাবেশ ও পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচীর প্রথমে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় সমাবেশ হয়। পরে ২ কিলোমিটার পদযাত্রা করে উদ্ধবগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ের সামনে এসে পদযাত্রা শেষ করে আরেকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মোগরাপাড়া ও উদ্ধবগঞ্জে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সোনারগাঁ উপজেলার সভাপতি বেলায়েত হোসেন।
বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জেলার আহ্বায়ক প্রদীপ সরকার, কৃষক ফ্রন্টের উপজেলার সদস্যসচিব ইসহাক মিয়া, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সহসভাপতি আনোয়ার খান, লাঙলবন্দ আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আনিসুর রহমান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের কৃষি, কৃষক ও ক্ষেতমজুর আজ সর্বগ্রাসী সংকটে জর্জরিত। সার-বীজ-কীটনাশক, সেচ, বিদ্যুৎসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহ হারাচ্ছে।
বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে সরকার ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধি করে কৃষকের সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিজেল ও ইউরিয়ার দাম বাড়ায় কৃষকের এক বিঘা জমিতে এখন খরচ বাড়বে ১৫০০ টাকা। এর উপর বিদ্যুতের লোড শেডিং এর ফলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, চাল-ডাল, তেল-নুন, পেঁয়াজ-ডিম, চিনি-তেলসহ নিত্যপণ্যেও দাম ক্রমাগত বেড়ে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সরকার শুধু ব্যর্থই নয় বরং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
ভিজিডি, ভিজিএফ, টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ প্রকল্পে দুর্নীতি দলীয়করণের ফলে এই প্রকল্পের সুফল গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী পাচ্ছে না। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে ধনীরা বিদেশে পাঁচার করছে অথচ মাত্র ১০/১৫ হাজার টাকা কৃষি ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ১ লাখ ৬৮ হাজার কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা ও হুলিয়া জারি করা হয়েছে। হুলিয়ার কারণে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ইউরিয়া সার, জ¦ালানি তেল দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো ও বিদ্যুতের লোড শেডিং বন্ধ, গ্রামীণ প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধ, কৃষিঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার ও গরীব কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের জন্য রেশন চালুর দাবি জানান।