স্টাফ রিপোর্টার (আশিক): নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, আগামী দলের ও নেত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে আর শেখ হাসিনা ডাক দিলে মৌমাছির মত আমাদের লাখ লাখ মানুষকে ঢাকা ছুটে যেতে হবে। এবারও আমরা খেলবো। এবার খেলা হবে কাবাডির মত। দেখি প্রতিপক্ষ কারা থাকে। শেষমেশ আমরাই খেলায় জিতবো।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নম পার্কে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
এর আগে ২৭ জানুয়ারী সংসদ অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শামীম ওসমানের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেন দাবী করেন এ প্রভাবশালী এমপি। এছাড়া ওই দোয়ার সময়ে ওসমানর পরিবারের সদস্যদের স্মরণ, সিটি নির্বাচনের জন্য শামীম ওসমানের প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। সে বিষয়টিও বক্তব্যে তুলে ধরেন শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, ‘সেদিন সংসদের সেই ঘটনার পর আমার মনে আর কোন কষ্ট নাই। তাই এবার নিজেদের ঝালাই দিতে চাচ্ছি। আমরাও মাঠে নামতে চাচ্ছি। এখানে যারা আছেন আমার কারও সাথে আলাপ হয়নি। গত পরশু জাতির পিতার কন্যা সংসদে একটা ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি অনেক কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছেন। সামনে আমাদের চরম কঠিন পরীক্ষা পার করতে হবে। আমাদের দায়িত্ব এই মেসেজটা সকলের কাছে পৌছে দেয়া।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে আমি কোথাও ছিলাম না। একজন এমপি হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করার দরকার ছিল করেছি। কিন্তু তার পরেও আমাকে নিয়ে কত কথা। আমি নাকি তৈমূর সাহেবকে দাঁড় করিয়েছি। কিন্তু আমার দল কিংবা দলের কোন নেতা আমাকে বলে নাই তৈমূর সাহেবকে দাঁড় করাতে। তার পরেও আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ২০১১ সালে কি করেছি বলবো না, ২০১৬ সালে কি করেছি বলবো না, এবার কি করেছি সেটাও বলবো না। বললে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু তার পরেও আমাকে আঘাত করে কথা বলা হয়েছে। আমাকে পছন্দ করেন এমন নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। তাদের মনে কষ্ট বেদনা আছে। আমি বলতে চাই পদের রাজনীতি আমি করি না আমার কর্মীরাও করেন না। আমরা রাজনীতি করতে এসেছি, রাজনীতি বিক্রি করতে আসি নাই। তারা একমাত্র শেখ হাসিনার কর্মী থাকতেই পছন্দ করে। আমার কাছে ভাল লেগেছে। অনেকে আওয়ামী লীগের কথা বলতে বলতে মৃত্যুর সময়ে কী বলবে তাও বলে দিয়েছেন। যারা এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ করেছেন তারা যেন আগামীতে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অন্তত রাজপথে আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আর আমাদের কোন কমিটিতে পদ লাগবে না। কর্মী হিসেবে রাইখেন। আমিও আমার কর্মীদের বলতে চাই, অনেককে নানা ধরনের প্রলোভন দিবে। যদি লোভে পড়ো চলে যাও। কিন্তু আমার কাছে থাকতে হলে কর্মী হিসেবই থাকতে হবে।’
শামীম ওসমান বলেন, সময় আসছে আমাদের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তারা যুদ্ধ করেছিল দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য। আন্তর্জাতিক রাজনীতি চলছে। হয়ত আগামী এক দুই মাসে একটা আঘাত করার চেষ্টা করার চেষ্টা হবে। তারা জিততে পারবে না কারন নেত্রীর ওপর আল্লাহর রহমত আছে। এবার খেলা হবে। এবার আমরাও খেলবো। এবার খেলা হবে কাবাডির মত। লাফ দিয়ে প্রতিপক্ষের মাথায় উঠে চেপে বসবো। আমাদের উপর আঘাত আসতে পারে। কিন্তু আমাদের রুখতে পারবে না কেউ। কারণ আমাদের সেনাপতি হলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমার তার সৈনিক। শেখ হাসিনার সৈনিকেরা কখনো হারতে পারে না। আমরা ঈমানদারির সাথে মরতে চাই। তাই শেখ হাসিনার দিকে যারা চোখ তুলে তাকাবেন আর যারা খেলতে চাইবে তাদের ঘরে ঘরে ঢুকে আঘাত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সিটি নির্বাচনে ঢাকা থেকে অনেক নেতা এসেছেন। তাদের অনেকেই মিসগাইড করেছেন। অনেকেই আমাদের ইঙ্গিত করে কথা বলেছেন। ইদানিং দেখা যাচ্ছে প্রথম আলো যারা ওয়ান এলেভেনের সৃষ্টি করেছিল তারা গাইডলাইন দেয় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কিভাবে রাজনীতি করবে কিভাবে কমিটি হবে। এতেই প্রতীয়মান কিছু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এরই মধ্যে পত্রিকাটি দিপু মনিকে নিয়ে সংবাদ করেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন তিনি এ পত্রিকা পড়েন না। আমাদের মধ্যেই থাকা কেউ কেউ হয়তো পৃষ্ঠপোশকতা করছে। আমাদের দলের কাউকেও করেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে কোন ষড়যন্ত্রে আমি দমবো না। চেয়েছিলাম রাজনীতি থেকে অবসর নিব। কিন্তু খেলা যেহেতু চলে এসেছে এখন আর নিচ্ছি না। মনে রাখতে হবে আমি নেতা মানলে শেখ হাসিনাকেই মানি। অন্য কাউকে গোনায় ধরি না। আমি সকলকে আগামী জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলবো। এ সময়টা দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারায়ণগঞ্জের যারা আওয়ামী লীগ অরজিনিয়াল করে তাদের মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনার হাত তাদের মাথার উপরেই আছে।