সকাল নারায়ানগঞ্জঃ চলতি বছরের গত ১১ মাসে নারায়ণগঞ্জে যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, গণধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৫১।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় নগরীর নবাব সলিমুল্লাহ্ রোডে জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এসময় নারায়ণগঞ্জে মহিলা পরিষদের গত এক বছরের কর্মতালিকা তুলে ধরা হয়।
এসময় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি আঞ্জুমান আরা আকসির, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক এড. হাসিনা পারভীন ও লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানারা বেগমসহ মহিলাসহ পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নারী নির্যাতনের এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
শুরুতেই চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন এড. হাসিনা পারভীন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের সংরক্ষিত জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যানে বলা হয়, চলতি বছরে নারায়ণগঞ্জে এ পর্যন্ত নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার ৪৭ জন। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫ জন এবং ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬ জনকে। নারী ও শিশু হত্যার ঘটনা ১৪টি, যৌতুকের জন্য স্বামী কর্তৃক হত্যার ঘটনা ৪টি। উত্যক্তকরণের শিকার ২২ জন। অপহরণের ঘটনা ৬টি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার ৪৩ জন, গৃহ পরিচারিকা নির্যাতনের শিকার ৪ জন। স্বল্পশিক্ষিত গৃহিনী থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবী নারীও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। পূর্বের বছরগুলোর তুলনায় নারী নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে বলেও যোগ করেন হাসিনা পারভীন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, দেশে নারী নির্যাতন দমন আইন থাকলেও তা সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। সামাজিক অবক্ষয় ও অনাচারের কারণেই নারী নির্যাতন ক্রমাগত বাড়ছে। নারীকে মর্যাদাপূর্ণ স্থানে রেখে রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে পারলেই কেবল নারী নির্যাতনের মাত্রা কমানো সম্ভব। এর জন্য সরকারকে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসতে হবে।
এসময় সারাদেশে নারী নির্যাতন দমন আইনের মামলাগুলোর পরিসংখ্যান চালিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানান তিনি।