সকাল নারায়ণগঞ্জ:
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
শাহিনুর বেগম (ছদ্দ নাম), সংসারের টানাপোড়েনে খুঁজতে থাকেন একটি কাজ। লেখাপড়া জানেন না তিনি।
অসুস্থ স্বামী কোনদিন কাজ করতে পারলে সংসারে খাবার জুটে, না করলে উপোস থাকতে হয়। শুনেছেন মহিলারা গার্মেন্টসে চাকুরি করে সংসার চালায়। তাইতো বন্দর থানাধীন মদনপুরে অবস্থিত ইপিলিয়ন গার্মেন্টস এ চাকুরি খোঁজার জন্য গত মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে যান। সেখানে কাউকে তিনি চিনেন না।
অপেক্ষায় থাকেন যদি কাউকে পাওয়া যায়। এর মধ্যে সেখানে অজ্ঞাত এক পুরুষের সঙ্গে কথা হয় তার। পুরুষটি নিজেকে ইপিলিয়ন গার্মেন্টসের একজন চাকুরিজীবী পরিচয় দেয়। সে শাহিনুরকে চাকুরি দিতে পারবে বলেও আশ্বস্ত করে। আর সেজন্য যেতে হবে এক বসের নিকট।
এভাবে বিভিন্ন ধরনের কৌশলগত কথা বলে তাঁকে নিয়ে যায় মদনপুরের আল-বারাকাহ হাসপাতালের পাশে একটি বাড়িতে। সেখানে সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত শাহিনুরকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে সেই পুরুষটি।
উক্ত ঘটনায় বন্দর থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম শুরু করেন তদন্ত। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজ-উদ-দৌলা এর সহযোগিতায় কাজ করেন বন্দর থানার অন্যান্য অফিসার ও জেলা আইসিটি শাখা। ঘটনাস্থল মদনপুর মোড় এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল এলাকা।
আসামি সনাক্ত করতে অনেক চেষ্টা করে একটি ছোট্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যে অজ্ঞাত আসামি সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তদন্তকারী দল।
গ্রেফতারকৃত আসামির নাম- মোঃ বাদশা@ সোহাগ@ ছোট(৩৫), পিতা- মোঃ আব্দুল মতিন@ মতি, মাতা- মৃত নূরজাহান বেগম, থানা- বাঞ্চারামপুর, জেলা- ব্রাহ্মনবাড়ীয়া, এ/পি-ডহর গাঁও, তানভিরের বিসমিল্লাহ হোটেল, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
গ্রেফতারের পর সে ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করেছে এবং ভিকটিম কর্তৃক সনাক্ত হয়েছে। একটি জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় যেমন হতবাক হয়েছিল, তেমনই দ্রুত আসামি সনাক্ত ও গ্রেফতার হওয়ায় পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, পিপিএম(বার)।