সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
নারায়ণগঞ্জ বন্দরে দৈনিক বিজয় পত্রিকার সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন খুন হন আড়াই মাস আগে। মামলার তিন আসামি গ্রেপ্তার হলেও অন্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন এবং মামলার বাদী ও পত্রিকার সম্পাদককে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
গত ১১ অক্টোবর রাতে বন্দর উপজেলার আদমপুরে এলাকায় দৈনিক বিজয়-এর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী বাদী হয়ে ৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার ৩ আসামির একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারভেজ চৌধুরী জানিয়েছেন, ইলিয়াস হত্যার তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। জানুয়ারির মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। তাঁর মতে, অবৈধ সংযোগের বিষয়ে রিপোর্ট করা নিয়ে নিহত ব্যক্তির সঙ্গে আসামিদের কথা-কাটাকাটি হয় এবং এর জের ধরে ইলিয়াস খুন হন।
ভাবা যায়, কথা-কাটাকাটির জের ধরে মানুষ খুন! আসলে যাঁরা অবৈধ গ্যাস-সংযোগ নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মানুষের কাছ থেকে, তাঁদের আঁতে ঘা পড়ার কারণেই সাংবাদিক ইলিয়াসকে জীবন দিতে হলো। অবৈধ গ্যাস-সংযোগ নিয়ে রিপোর্ট করে তিনি কোনো অন্যায় করেননি।
বরং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করেছেন। তাঁর রিপোর্ট প্রকাশের পর এলাকার বেশ কিছু অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এই অবৈধ গ্যাস-সংযোগের সঙ্গে যেমন তিতাস গ্যাস কোম্পানির স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত, তেমনি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও। আর প্রভাবশালীদের হাত এতই লম্বা যে সাংবাদিক খুন করার পর মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদীকে হুমকি দেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, পলাতক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যদি আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টাই করা হয়, তাহলে তাঁরা বাদী ও পত্রিকার সম্পাদককে হুমকি দেন কীভাবে? বাদীকে হুমকি দেওয়ার সাহস তাঁরা কোথায় পান? দেশে কি আইনের শাসন বলতে কিছু নেই? আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে হুমকিদাতার হদিস পাওয়া কঠিন নয়। অভিযোগ আছে, আসামিদের আশ্রয়–প্রশ্রয়দাতারা খুনিদের রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছেন এবং তদন্তকাজ থেমে আছে।
অবিলম্বে ইলিয়াস হত্যা মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে বিচারে সোপর্দ করা হোক। সেই সঙ্গে ইলিয়াসের পরিবারের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।