পুরো পৃথিবী থমকে আছে করোনাভাইরাসের প্রভাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই মহামারী থেকে সুরক্ষা পেতে নাগরিকদের ঘরবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষও স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধি মেনে ঘরবন্দি।
এরমধ্যেই এসেছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। তবে এবারের ঈদ মানুষের জীবনে একেবারেই ভিন্ন আমেজে উপস্থিত হয়েছে। নেই গণজমায়েত, নেই আড্ডা, নেই বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড় কিংবা আত্মীয় পরিজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া।
সাধারণ মানুষের মতো বিনোদন জগতের তারকারাও ছিলেন ঘরবন্দি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনেকটা অসামাজিক হয়েই কাটাতে হয়েছে এবারের ঈদ। তবে ঘরে বসেই ভক্তদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারকাদের কেউ কেউ। আর এ কাজটা সহজ করে দিয়েছে ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া। বিনোদন জগতের কয়েকজন তারকা কীভাবে এবারের ঈদ কাটিয়েছেন তা নিয়েই এ আয়োজন।
দেশবরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন জীবনের ব্যতিক্রমী এক ঈদ উপদযাপনের কথা জানিয়েছেন যুগান্তরকে।
তিনি বলেন, এবার ঈদ আর অন্য সাধারণ দিনের মধ্যে খুব পার্থক্য ছিল না। সারাদিন ঘরবন্দি। ঘরে বসেই আনন্দ, ঘরে বসেই কাজ, এভাবেই দিন কাটছে। ঈদের দিন ভিন্ন কিছু করা হয়নি। নিজের কাজ নিজেই করেছি। এখনও করে যাচ্ছি। খবর দেখার পর মনে হলো যে ঈদের দিন। এটা সত্যি যে, ফোনে ঈদ ঈদ মনে হয়েছে। অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। কিন্তু আতঙ্ক তো আর যায়নি। প্রতিদিনই মানুষ মরছে। যা দেখে আর ভালো লাগে না। জানি না কত দিন এভাবে মৃতের সংখ্যা গুণে দিন পার করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করে দিক- এটাই কামনা করছি।
প্রখ্যাত গীতিকবি ও চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার জানিয়েছেন ভিন্নরকম এক ঈদ উদযাপনের কথা।
তিনি বলেন, এবারের ঈদ একেবারই ভিন্নভাবে কেটেছে- এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। আগের ঈদগুলোতে আমার বাসায় মানুষের ভিড় থাকতো। একজনের পর একজন আসতো। শুভেচ্ছা বিনিময় হতো। সময় কেটে যেতো। এবারও সবাই শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে, তবে ফোনে, মেসেজে। কেননা, করোনার আতঙ্ক আমাদের ঘরবন্দি করেছে, তাই আর সশরীরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। সারাদিন বাসায় বসে কাটাতে হয়েছে, হচ্ছে। খুব ভালো বলবো না, আবার একেবারই মন্দ নয়। বেঁচে আছি- এটাই বড় ঈদ।
প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কনকচাঁপাও ঈদে ঘরের বাইরে যাননি। তিনি বলেন, করোনার এই সময়ে কারো ঈদই ভালো কাটার কথা নয়। আমার বেলাও তাই। তবে ঈদের দুদিন আগে থেকেই আমি আতঙ্কে ছিলাম।
কারণ, আমাদের অ্যাপার্টম্যান্ট লকডাউন করা। ঘর থেকে বের হইনি, অনেক দিন। ঘরে বসে ফোনে ফোনে কেটেছে ঈদ। এটা একটা পরীক্ষা। জানি না এ পরীক্ষায় আমরা কবে উত্তীর্ণ হতে পারব? সব মিলিয়ে ঈদ খুব ভালো কেটেছে বলা যাবে না, যদি আগের ঈদের সঙ্গে তুলনা করি। সুস্থ আছি, এতেই মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই।
ঢাকাই ছবির একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক সোহেল রানাও চার দেয়ালের মাঝে ঈদের সময়টুকু কাটিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখন তো সে বয়স নেই ঈদ বা কোনো উৎসব ঘটা করে করব। বয়স হয়েছে, এখন আমাদের পরের প্রজন্মের আনন্দটা উপভোগ করব। কিন্তু এবারের ঈদ এতটা ভিন্ন হবে কখনও ভাবিনি। করোনার কারণে সবকিছু কেমন বদলে গেল। আমি এমনিতে বাসার বাইরে যাই না। মানুষ আমার বাসায় আসতো। এবার তাও হয়নি করোনার কারণে। একাই পরিবারের সঙ্গে কেটেছে ঈদ। এমন ঈদ কখনো আশা করিনি, তবে কিছু করারও নেই। এমন যে শুধু আমার বেলায় হয়েছে তা নয়। পুরো পৃথিবী আজ স্থবির। ঈদ নয়, বিশেষ কোনো দিনই নয়। সবাই কেমন একটা অস্থির সময় কাটাচ্ছি। যা আমাদের কাম্য নয়।
দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খান এবারের ঈদ কাটিয়েছেন ঘরে বসেই। ভাইরাস থেকে নিজেকে, পরিবারকে সুরক্ষা দিতে একেবারেই বাইরে যাননি এ নায়ক।
ঈদের দিন কীভাবে কাটিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম একটা ঈদ কাটাতে হবে সেটা কখনো ভাবিনি। কাছের মানুষদের সঙ্গে দেখা নেই, ভক্তদের সঙ্গে দেখা নেই, সিনেমা হলে সিনেমা নেই। আসলেই এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। কিন্তু কিছুই করার নেই। কারণ, অদৃশ্য এক শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি আমরা। এ যুদ্ধে আমাদেরকে জয়ী হতেই হবে। এর জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ঈদের পুরোটা দিন ঘরেই কাটিয়েছি। এবারের ঈদে নিজের কিছু কাজ দেখার সুযোগ হয়েছে। সেগুলো দেখেছি। আমার বিশ্বাস, একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আবার আগের মতো মুক্ত বাতাসে প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারবো। শুধু সময়ের অপেক্ষা।
এবারের ঈদ একেবারেই ব্যতিক্রম কেটেছে ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় তারকা দম্পতি অনন্ত ও বর্ষার। প্রতিবছরই ঈদের দিন কিংবা তার পরদিনই সন্তানদের নিয়ে বিদেশ যান তারা। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। ঘরে বসেই দিন কেটেছে তাদের।
তবে একেবারে বসেও থাকেননি। এতদিন এই দম্পতি টিভি পর্দা কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসেছেন অতিথির আসনে। এবার বসেছেন মুখোমুখি। যেখানে বর্ষাকে দর্শকরা পেয়েছেন উপস্থাপকের ভূমিকায়। আর তার সামনে অতিথির আসনে বসে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অনন্ত।
ঈদের দিন অনন্ত জলিলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি প্রচার হয়েছে। ঈদের আয়োজন প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল বলেন, অন্য ঈদগুলোর মতো এবার আমরা কোনো টিভি অনুষ্ঠানে অংশ নেইনি। কিন্তু ভক্তরা আমাদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন, ঈদে নতুন কী নিয়ে আসছি সেটা জানার জন্য। তদেরকে তো আর নিরাশ করা যায় না। তাই নিজেরাই ঘরে বসে এমন কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছি। আলাপচারিতায় অনেক কিছুই বলেছি। আমার চ্যানেলে গেলে ভিডিওটি দেখতে পারবেন সবাই। এছাড়া বাকি সময় সন্তানদের সঙ্গেই কেটেছে।
প্রতিবার এতিমখানায় গেলেও এবার যেতে পারিনি। তবে তাদের জন্য সহযোগিতা যা দরকার সেটা ঈদের আগেই পৌঁছে দিয়েছি। বর্ষার কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, ঈদ জীবনে এভাবে আসবে- সেটা কখনও চিন্তাও করিনি। তবুও এসেছে। কীভাবে কাটিয়েছি সেটা একটা দীর্ঘশ্বাস। কারণ, মানুষের জীবনে এই একটি দিনই বিশেষ আনন্দ নিয়ে আসে। কিন্তু সেই আনন্দ করোনা নামের এক ভাইরাস ধ্বংস করে দিয়েছে।
ঘরে থেকে প্রার্থনা করেই ঈদের পুরোটা সময় কাটিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী চম্পা। এবারের ঈদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুই করার ছিল না। তাই ঘরের মধ্যেই ছিলাম। বেশিরভাগ সময় প্রার্থনা করেই কেটেছে। কোথাও যাইনি এবং আমার বাসায়ও কেউ আসেনি। মানুষের জীবন বিপর্যয়ে, এই মুহূর্তে কি আনন্দ ভালো লাগে?
অন্যদিকে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে দুষ্টমি করেই ঈদের দিনটি কাটিয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিল খান।
তিনি বলেন, এই ঈদটা একদম ব্যতিক্রম। করোনা এবং ঈদের মাত্র দুদিন আগে হানা দেয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ আ্ম্পান- এ দুটোর সঙ্গে যুদ্ধ করেই ঈদ কাটাতে হয়েছে। কারোরই তো মনের অবস্থা ভালো নয়। মানুষের এত হাহাকার, কষ্ট। এর মধ্যে ঈদটা তো কারোরই ভালো যাবে না- এটাই স্বাভাবিক। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। এবারের ঈদে বাড়তি কোনো আয়োজন ছিল না। বাসাতেই ছিলাম সারাদিন। বাচ্চাদের সঙ্গেই দুষ্টুমি আর ঘরের কাজকর্ম করে সময় কেটেছে।
চিত্রনায়ক আমিন খান লকডাউনের মধ্যে নিজের রান্নার হাত ঝালিয়ে নিয়েছেন। আর সেটার পরীক্ষা দিয়েছেন ঈদের দিন।
তিনি বলেন, রমজান মাসে যে রান্না করা শিখেছি, ঈদের দিন সকাল থেকেই সেটা শুরু করেছি। এছাড়া সারাদিন বাসাতেই ছিলাম। আমার বাচ্চা ভালো বলেছে, যেহেতু আমরা কোথাও যাব না এবং আমাদের বাসায়ও কেই আসবে না, তাই আমার বেডরুমে তুমি এসো, তোমার বেডরুমে আমি যাব। এটাই আমাদের বেড়ানো। এভাবেই দুষ্টমি আর আড্ডাতে কেটে গেছে আমাদের ঈদ।
নিজে ঘরে থেকে এবং সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েই ঈদের সময়গুলো পার করেছেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা।
তিনি বলেন, মানুষের মনে ঈদের সেই আমেজটা এবার নেই। সারা পৃথিবীরই একই অবস্থা। এবারের ঈদ চার দেয়ালের মধ্যে পরিবারকে নিয়ে ঈদ কাটিয়েছি। বিশেষ কোনো আয়োজন ছিল না। বাইরে কোথাও যাইনি। সবাইকে বলব, যতক্ষণ না আমাদের মুক্তি মেলে ততক্ষণ ঘরেই থাকুন, পরিবারের সঙ্গে থাকুন।
ঈদের পুরোটা সময় বাড়িতেই কাটিয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাকের পুত্র চিত্রনায়ক খালিদ হোসেন সম্রাট।
তিনি বলেন, সময়টা এখন খুবই খারাপ যাচ্ছে। এ মুহূর্তে ঈদে আনন্দ করার মতো মানসিক অবস্থা সচেতন মানুষের আছে বলে আমার মনে হয় না। লকডাউনের আগে থেকেই আমি বাসায়। ঈদের দিন বাসাতেই ছিলাম। পরিবারের সঙ্গে, বাচ্চাদের সঙ্গেই সময় কাটিয়েছি।
চিত্রনায়ক ইমনও ঈদে বাড়িতেই ছিলেন। তিনি বলেন, ঈদ তো বাসায় বসেই কাটছে। ঈদের যে একটা আনন্দ থাকে, মজা থাকে, সেটা এবার পাইনি একদম। এবারের ঈদটা একটা ব্যতিক্রমী ঈদ ছিল। এটা শুধু আমার জন্য নয়, সবার জন্যই। জীবনে কখনও যে ঈদের নামাজ বাসায় পড়তে হবে- এটা তো ভাবিইনি। ৩০টা রোজা রাখার পর ঈদগাহে নামাজ পড়তে যাওয়ার মধ্যে ভিন্নরকম আনন্দ কাজ করে। এরপর সবার সঙ্গে কোলাকুলি করার ব্যাপারটা সবচাইতে বেশি মিস করেছি। ঈদের দিন একটু বোনের বাসায় যাওয়া, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, সবার সঙ্গে দেখা হওয়া, আমাদের বাসায় আত্মীয়-স্বজনরা আসে- এটাও মিস করেছি।
ঈদের সময়টা গ্রামের বাড়িতেই কাটাচ্ছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। তিনি বলেন, এবারের ঈদ তো একদমই আলাদা। তবে প্রতিবারের চেয়ে ভিন্ন। আমি আমার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে এসেছি। এবার তো অনেক বিধিনিষেধ থাকছে করোনার কারণে। যদিও আমাদের এলাকা এতটা এফেক্টেড না। তারপরও সাবধানতা অবলম্বন করতেই হচ্ছে।
জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসানের ঈদ কেটেছে ঘরে বসেই। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে পৃথিবীর অন্য সবার মতো আমারও ঈদ একইরকম কেটেছে। কারণ, ইচ্ছে করলেও এবার ভিন্ন আয়োজনে ঈদ করা সম্ভব ছিল না। মনের মধ্যে ভয় আছে। মানুষ অদৃশ্য শত্রুর দাপটে অস্থির। নিরাপদে থাকতে হচ্ছে। তাই আমিও পরিবারের সঙ্গে বাসাতেই ঈদ কাটিয়েছি।
জনপ্রিয় অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদের ঈদ কেটেছে ঘরেই।
তিনি বলেন, ঈদের অনেক আগে থেকেই আমি অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা নিয়ে দিন পার করছি। করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ করেছি মার্চ মাসেই। তারওপর আমার স্ত্রী বিপাশা লকডাউনের কারণে আমেরিকায় আটকা পড়ে আছে। ওর জন্য সবসময় চিন্তা হয়। আমার সন্তানরাও তাদের মায়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
বলা যায় লকডাউনের পর থেকে সংসারটা আমি একাই সামলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই সিচুয়েশনে আনন্দ করার সুযোগ নেই। সবমিলিয়ে জীবনের এক কঠিন সময় পার করছি আমরা। তারপরও ঈদের দিন ছেলেমেয়েদের কিছুটা আনন্দঘন মুহূর্ত তৈরি করার চেষ্টা করেছি।
ঈদের সময় অনেকটা বিষন্নতায় কেটেছে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর। মাত্র কয়েকদিন আগে তার বিয়ে বিচ্ছেদের খবর মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। যদিও প্রায় মাসখানেক আগে স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটেছে।
করোনায় কর্মহীন, সংসারে অশান্তি- সবকিছু মিলিয়ে বিষন্নতায় কেটেছে এ নায়কের ঈদ। তবুও চেষ্টা করেছেন নিজেকে হাসিখুশি রাখতে। তিনি বলেন, এখন তো সবার মাঝেই একটা ভয় কাজ করছে। চাপা আতঙ্ক কাজ করছে।
ঈদ মানে খুশি, কিন্তু সেই খুশি কি সবার মনে এখন আছে? প্রতিমুহূর্ত একটি ভয় নিয়ে চলতে হচ্ছে। বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। আসলে এটা আমাদের জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা। এবারের ঈদের পুরোটা সময় বাসাতেই কাটিয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই বাসায় কোনো আত্মীয়স্বজন আসেনি। আমিও কোথাও যাইনি। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আসলে ঈদ কেমন কেটেছে সেটা জানি না। তবে এমন ঈদ যেন জীবনে না আসে সেটাই চাইব।
ছোটপর্দার আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুন নূর সজলও ঈদে বাইরে কোথাও যাননি। ঘরে শুয়ে বসেই কেটেছে তার ঈদ। তিনি বলেন, এবারের ঈদ ঘরবন্দি ঈদ। বাইরে যাওয়ার কোনো প্ল্যান ছিল না, তাই যাইওনি। ঘরেই ছিলাম। ঘরে থেকেই সবাইকে ফোনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছি। টিভিতে নিজের এবং অন্যদের নাটক দেখেছি। রান্নাবান্নার কাজও কিন্তু করেছি এবারের ঈদে। আসলে মাকে সাহায্য করাটাই ছিল মুখ্য বিষয়।
নাটক ও সিনেমার আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও এবারের ঈদ কাটিয়েছেন চার দেয়ালের মাঝেই। তিনি বলেন, করোনার কারণে ঘরবন্দি হয়েছি অনেক আগেই। এই বন্দি জীবনের মাঝেই এলো ঈদ। অন্য বছরের ঈদগুলোতে শুটিং ব্যস্ততা থাকতো অনেক। এবার সেরকম কিছু ছিল না। আমার অভিনীত যে নতুন নাটকগুলো প্রচার হয়েছে সেগুলো অনেক আগেই শুটিং করা ছিল। লকডাউনের পর বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। ঈদের দিন পছন্দের খাবার তৈরি করার পাশাপাশি একসঙ্গে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। বেশ কিছু দাওয়াত ছিল। কিন্তু যাইনি।
টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুমাইয়া শিমু ঈদের সময় কাটানো প্রসঙ্গে বলেন, এই জীবনে যত ঈদ পেয়েছি তার মধ্যে এবারের ঈদ পুরোই আলাদা। সম্পূর্ণ নতুন ধরনের এক ঈদ পালন করলাম। শঙ্কা, ভয় নিয়ে সময়গুলো পার করছি। অন্যসময় ঈদে অনেকগুলো দাওয়াতে উপস্থিত থাকতাম, বাইরে ঘুরতে যেতাম। এবার এখনও পর্যন্ত ঘরেই আছি। সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভি দেখে ঈদ উদযাপন করছি।