সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উইজডম এর শুরুর জীবনে প্রথম কারিগর আলী আহম্মদ। বর্তমানে যার বয়স ৭০ বছরের উর্ধে। বর্তমানে স্ত্রী ৪ ছেলে ও ছেলের বউদের নিয়ে বসবাস করেন বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায়।
আলী আহম্মদ উইজডমে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে স্বয়ং সম্পূর্ন হিসেবে গড়ে তুলে ছিলেন। তাঁর চার ছেলের মধ্যে সবর বড় ছেলেটি ছিল জন্মগত ভাবে প্রতিবন্ধী। দ্বিতীয় ছেলেটিও ক্লাস সেভেনে অধ্যয়নরত অবস্থায় হঠাৎ একদিন অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। সেই ছেলের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে বহুকষ্টে গড়ে তোলা বন্দর চৌধুরী বাড়ি এলাকায় তার নিজের বসতবাড়িটি বিক্রি করে দেয়।
এরপর তিনি বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। বাসার ভেতরেই কয়েকটি মেশিন বসিয়ে নীট পন্য তৈরি করে সেগুলো নয়ামাটি বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু করোনার ভয়াল থাবায় বর্তমানে অন্য সকলের মত তার ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যায়।
সেই সাথে তিনি নিজে সহ তাঁর বাকি দুই ছেলেও বেকার হয়ে যায়। দুটি প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা খরচ সহ প্রায় ১০ থেকে ১২ সদস্যের সংসারটি চালাতে গিয়ে আবারো সর্বস্ব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন আলী আহম্মদ এর পরিবার।
গত কয়েক দিনে করোনা মোকাবেলায় এমপি সেলিম ওসমান এবং তাঁর সহধর্মির্নী সাধারণ মানুষের মাঝে সহযোগীতার যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সেই সকল কর্মকান্ডের সংবাদ দেখে সেলিম ওসমান সাপোর্টাস ফোরামে মোহাম্মদ ইমরান আহম্মেদ নামের একটি প্রতিবন্ধী ছেলে নিজেদের পরিবারের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। যা পরবর্তীতে এমপি সেলিম ওসামনের দৃষ্টি আকর্ষন হয়।
পরে তিনি ছেলেটির দেওয়া মোবাইল নাম্বারের যোগাযোগ করে তাঁর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে যাবতীয় খোঁজ খবর নেন। ছেলেটির বাসায় গিয়ে জানতে পারেন তার বাবা আলী আহম্মদ এমপি সেলিম ওসামনের উইজডম অ্যাটায়ার্সের যাত্রাকালের প্রথম কারিগর। আজকের যে বিজনেস আইকন সেলিম ওসমান। তীলে তীলে এই অবস্থানে আসার পেছনে যে কজন এই দীর্ঘ পথের যাত্রা পথ শুরু করে ছিলেন আলী আহম্মদ তাদেরই একজন।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় এমপি সেলিম ওসমান সরেজমিনে ছুটে যান বন্দর শাহী মসজিদ এলাকায় সেই আলী আহম্মদ এর বাসায়। সেখানে গিয়ে তিনি আলী আহম্মদ এর পরিবারের খোঁজ খবর নেন।
সেই হাতে তিনি আলী আহম্মদ এর পরিবারের জন্য সাথে করে নিয়ে যান ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল, ৫ কেজি মুসুরের ডাল, ৫ কেজি মুগ ডাল, ৫ কেজি বুটের ডাল, ৫ লিটার তেল, ৫ কেজি পেয়াজ, ২ কেজি রসুন, ২ কেজি আদা, ৫০০ গ্রাম হলুদ গুড়া, ৫০০ গ্রাম মরিচ গুড়া, ২০০ গ্রাম ধনিয়া গুড়া, ৩০ গ্রাম জিড়ার গুড়া, ২ কেজি চিনি, ৪০০ গ্রাম গুড়ো দুধ, ৪০০ গ্রাম হরলিক্স, ২ প্যাকেট বিস্কেট, ১ কেজি লবন।
তার প্রতিবন্ধী দুই ছেলের হাতে তুলে উপহার হিসেবে দেন ৩হাজার টাকা। সেই সাথে আলী আহম্মদ এর পরিবারটি যেন আবারো ঘুরে দাড়াতে পারে সেই জন্য আলী আহম্মদ এর ব্যবসা পুণরায় চালু করার জন্য নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন এমপি সেলিম ওসমান।
আলী আহম্মদ ও তাঁর পরিবার এমপি সেলিম ওসমানকে তাঁর বাসায় উপস্থিত দেখে হতবাক হয়ে যান। সেই সাথে সেলিম ওসমানের হাত থেকে সহযোগীতা পেয়ে পুরো পরিবারটিই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এ ব্যাপারে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আমার ব্যবসার শুরু জীবনে আজকে আমাকে ব্যবসায়ী সেলিম ওসমান তৈরীর কারিগর এই আলী আহম্মদ। যে কজন কারিগর আমার ছিল তাদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার শ্রেষ্ঠ। আমি চাই তাঁর পরিবারটি পুণরায় ঘুরে দাড়াক। তাই আমি আমার পক্ষ থেকে সামান্য কিছু দিয়ে তাকে সহযোগীতা করার চেষ্টা করেছি।