1. [email protected] : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. [email protected] : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
আমরা মুসলিম, এটিই আমাদের পরিচয় - সকাল নারায়ণগঞ্জ
শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সার্টিফিকেট প্রদান  মুন্সিগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে সাংবাদিক বিভূ রঞ্জন সরকারের মৃতদেহ উদ্ধার বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির লীলাভূমি- মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা মানব কল্যাণ পরিষদ চেয়ারম্যান মান্নান ভূঁইয়াকে শ্রেষ্ঠযুব সংগঠকের পুরস্কার তুলে দিলেন জেলা প্রশাসক আরাফাত রহমান কোকোর ৫৬তম জম্মদিনে মহানগর বিএনপির দোয়া পথশিশুদের নিজ হাতে খাবার খাওয়ান: এড. টিপু..  শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব পালনে পূজা পরিষদের মতবনিময় সভা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জেছাত্র ফ্রন্টের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কর্ম দক্ষতা, জনকল্যাণমুখী ও মানবিকতা কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখায়

আমরা মুসলিম, এটিই আমাদের পরিচয়

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০২০
  • ২৯৫ Time View
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সকাল নারায়ণগঞ্জ অনলাইন ডেস্কঃ

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ঘটে গেল চরম দাঙ্গা। হিন্দু-মুসলিম হানাহানির এক চরম রূপ পরিলক্ষিত হল ভারতের রাজধানীতে। এনআরসি ও সিএএ-র প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে মুসলমান ও সাধারণ হিন্দুরা আন্দোলন করে আসছিল দিল্লিসহ ভারতের সব রাজ্যেই।

ক্ষমতাসীন বিজেপি এ সব আন্দোলন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে বিকল্প পথ হিসেবে গ্রহণ করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির মতো মন্দ দৃষ্টান্ত।

এ দেশের ইসলামপন্থী কিছু নেতার গর্জন দেখে নেহায়েত হাসি পাচ্ছে। কেউ জিহাদের ময়দানে দাওয়াত দিচ্ছেন, কেউ ডাকছেন ঘেরাও কর্মসূচি আবার কারও মুখে রাজপথ রঞ্জিত করার অগ্নিস্ফূলিঙ্গ।

ফেসবুক স্ট্যাটাস আর খবরের কাগজে তাদের আবেগ আর কলমী শক্তি দেখলে মনে হবে, ভারত বুঝি আজকেই ভেঙ্গে গেল। তাছাড়া অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাদের বক্তব্যের উদ্ভাবনী শক্তি দেখে মনে হচ্ছে, আগামীকল্ই হয়তো বিশ্বটা মুসলিমদের পদচুম্বন করবে।

এবার আসুন ‘হাসি পাবার’ কারণ ব্যাখ্যা করি। এখানে বর্তমান মুসলিম বিশ্বে চলমান কয়েকটি ঘটনার উদাহরণ টেনে বাংলাদেশি আলেম-উলামা ও ইসলামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের জ্ঞান আবিষ্কারের তুলনামূলক আলোচনা করব। যাতে করে বিষয়টি পুরো বোধগম্য হয়।

প্রথমত: যদি কিছু যুদ্ধবিদ্ধস্ত মুসলিম দেশের কথা বলি, যেমন ধরুন ফিলিস্তিন, তারা সুদীর্ঘকালব্যাপী জুলমের স্বীকার। বিশ্ব মুসলিম বরাবরই কাঁধে কাঁধ রেখে, তালে তাল মিলিয়ে একই সুরে এর প্রতিবাদ করছে। কারণ ইহুদিরা মুসলিম ভাইদের নির্বিচারে হত্যা করছে।

যদি আফগানিস্তান,লিবিয়া,ইরাক সিরিয়াসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের কথা বলি, তাহলে সেখানেও সবার একই উক্তি। বাংলাদেশিরাও সবার সঙ্গে একই মত ও পথের অনুসারী।

এ ক্ষেত্রে সব দল-মতের আলেম-উলামাদের আদর্শ হল রাসূলের (সা.) হাদিস, অর্থাৎ কোনো একজন মুসলিম ব্যথা পেলে পুরো মুসলিম উম্মাহ ব্যাথিত হবে। এ ক্ষেত্রে কারও কোনো দ্বিমত নেই।

দ্বিতীয়ত: সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রোহিঙ্গা ইস্যু ও কাশ্মীর দাঙ্গার কথা বললে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। দৈনিক পত্রিকাসহ যে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৃষ্টি দিলেই দেখা যাবে শত শত শিরোনাম। দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম এহেন নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশের সব ধর্মপ্রাণ মুসলিম, এক সারিতে দাঁড়িয়ে সমস্বরে প্রতিবাদ করেছে। এ সব ক্ষেত্রে কেউই যাচাই করেননি যে-রোহিঙ্গারা কওমি নাকি আলিয়া, ওয়াহাবী নাকি সুন্নী, সহীহ হাদিস নাকি জায়ীফ হাদিস, পীরপন্থী নাকি মাজারপন্থী, আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি।

নির্বিশেষে সব শ্রেণির ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা নির্বোধ হায়েনাদের ধিক্কার জানিয়েছেন। কক্সবাজারে গেলেই তো বোঝা যায়। রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহযোগিতায় সাধারণ মুসলিম থেকে শুরু করে আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ— সবার সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে।এ ক্ষেত্রেও কারও ভিন্ন কোনো মন্তব্য নেই।

অতি সম্প্রতি দিল্লির কথা তো সবারই জানা। তারা প্যান্ট খুলে সাংবাদিকদের যাচাই করছে- মুসলিম নাকি হিন্দু। সেখানকার হিন্দু উগ্রবাদীরা মুসলিমদের ওপর বেধড়ক হামলা চালিয়েছে, মসজিদ, মাদরাসা পুড়ে ছাই করছে। মসজিদের ওপরে উঠে মাইকগুলো ভেঙ্গে ফেলা,আর হুনুমানের পতাকা উড়ানোর দৃশ্যটি দেখলেই অনুমান করা যাবে যে, ওরা কতটা উগ্র।

এরা মূলত কোনো ধর্মানুসারী নয়। কারণ ধর্মাবতার কোনো ধর্মগ্রন্থেই এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজের শিক্ষা দেননি। এরা এক ধরনের ধর্ম ব্যবসায়ী। স্বার্থান্বেষী লাঠিয়াল ও জঙ্গি।

পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র হওয়ায় দিল্লির রক্তপোড়া দুর্গন্ধটা আমাদের নাকেই বেশি লাগে। তাই আমরাই সমস্বরে বলিষ্ঠ আওয়াজ তুলি। যেহেতু ওপার বাংলার মুসলিমরাও আমাদের ভাই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন: মুসলিমরা পরস্পরে একে অন্যের ভাইস্বরূপ [হুজুরাত:১০]। তাই ভাইয়ের আঘাতে ভাই ব্যথিত হবে, এটাই ইসলামের শিক্ষা ও চেতনা। এখানেও সবাই সমমনা।

কিন্তু আপত্তির বিষয় হল অন্য জায়গায়। এতক্ষণ ছিল ওপার সীমান্তের ভাতৃব্যথার হাহাকার। এ পর্যন্ত আমরা সবাই এক সারিতে, একই স্লোগানে। কিছুটা যথার্থই বলা যায় যে,আল্লাহর বাণী ‘তোমরা সামষ্ঠিকভাবে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধর আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যেও না’ [আল-ইমরান :১০৩] আয়াতটির উপর কিছুটা হলেও আমল করতে পেরেছি।

এবার যদি সীমান্তের ভেতরে আসি অর্থাৎ বাংলাদেশে বসবাসরত মুসলিমদের কথা বলি তাহলেই যত্তসব ঝামেলা। এ দেশের কোনো মুসলিম যদি কোনো হায়েনার আঘাতে মৃত্যুবরণ করে তাহলে আমরা ২য় বিশ্বযুদ্ধের মতো অক্ষ শক্তি ও মিত্র শক্তি খুঁজি। কেউ কেউ মরহুমকে শহীদ বলি আবার কেউ কেউ হায়েনাটাকে গাজী উপাধি দেই।

অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী দলগুলোর কোকো একপক্ষ আক্রান্ত হলে, বিপরীত পক্ষ খুশি হয় আর অন্য দলগুলো তিরষ্কার করে। অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: যদি মুমিনদের দুটি দল পরস্পরে যুদ্ধ করে, তাহলে তাদের মাঝে সন্ধি স্থাপন করে দাও। [হুজুরাত:৯]

তাহলে বিষয়টা কী দাঁড়াল? কোরআনের খেলাফ হয়ে গেল না? তাছাড়া ওপার সীমান্তেও তো মুসলিমদের মাঝে গ্রুপিং আছে। সেখানে তো এত দল-খুঁজিনি।তাদের ব্যথায় তো আমরা সবাই ব্যথিত হচ্ছি। আর নিজেদের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় দ্বন্দ্ব। ঠিক এ জায়গাটিতেই আমার আপত্তি!

যেখানে নিজের দেশেই আমরা বিভক্ত, সেখানের ভিনদেশের জন্য কান্না করা কতটা বিশুদ্ধ ?

দিল্লির জন্য আমাদের আর্তনাদটা মাছের মায়ের পুত্র শোক নয়তো? আমাদের এই কাঁদার ছড়াছড়ি আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ? ইউটিউব, ফেসবুক, গুগল ইত্যাদিতে গেলেই শুনা যায় এক বক্তা অন্য বক্তার নিন্দাবাদ গাইছেন।

কোরআন-হাদিস বাদ দিয়ে গান, কৌতুক আর পরনিন্দায় লিপ্ত। অথচ পরনিন্দাকে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সমতুল্য বলা হয়েছে। রাসূল (সা.) বলেছেন, পরনিন্দা ব্যাভিচার হতেও জঘন্যতম। কোনো বক্তা যদি সামান্যতম ভুলও করে ফেলেন, অপর বক্তা সেটা নিয়ে কথার ফুলঝুরি ছাড়েন। জনতার হাত তালি পাওয়ার জন্য যাচ্ছে-তাই বলে বেড়ান। একে অপরকে কথায় কথায় কাফের ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অনেকেই হয়তো বলবেন সংশোধনী দিচ্ছি। কিন্তু প্রশ্ন হল যাকে সংশোধনী দিচ্ছেন, তাকে অবহিত করেছেন? কিংবা যাদের সামনে বিশুদ্ধ বাণী দিচ্ছেন, তারা সে ব্যাপারে কতটুকু অবগত ? একবার কি ভেবে দেখেছেন, আপনাদের এমন সব বেপরোয়া কথাবার্তা আর বেফাস মন্তব্যের ফল কী দাঁড়াচ্ছে ?

নিজের সুরতটা ঢেকে কিছুক্ষণ জনতার মাঝে দাঁড়ান, তাহলেই বুঝে আসবে। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার সর্বত্র আলেমদের সমালোচনা। সাধারণ মানুষ আজ বিভ্রান্ত। কে কাকে বিশ্বাস করবে, কার কথা অনুসরণ করবে– সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না তারা। দাড়ি-টুপিওয়ালা দেখলেই সবাই বিরক্ত হয়। চাপাবাজ হিসেবে আখ্যা দেন।

আল্লাহ আমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু আমরা কোন্ দিকে আহবান করছি ভাবার সময় এসেছে।

ভিন্নধর্মীদের দিকে একটু তাকান তো। তাদের মাঝেও তো মতপার্থক্য আছে, ছোট-বড় আছে, শুদ্ধ-অশুদ্ধ সবই আছে কিন্তু আমাদের মতো ছন্নছাড়া তো নয়। তারা তো আমাদের মতো ইসলামের দীক্ষা নেননি। তবুও তো তারা আমাদের মতো বেখেয়াল আর অদূরদর্শী নন।

মৌলিক বিষয়গুলোর ভিত্তিতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গড়ে তুলেছে। প্রত্যেকেই নিজস্ব মতাদর্শ মেনে চলে কিন্তু নিজেদের স্বার্থে সবাই একই সারিতে দাঁড়ায়,একই সুরে কথা বলে। কিন্তু আমরা কেন পারি না? আমরা তো মদিনার সনদ অধ্যয়ন করেছি।

তাহলে আমাদের সমস্যাটা ঠিক কোথায়? আমরাও কি পরি না একতাবদ্ধ হতে!

তাই চলুন, ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তিকে কেন্দ্র করে একটি বৃহত্তর মুসলিম ঐক্য গড়ে তুলি। যে সব জাতি-গোষ্ঠী নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে, কোরআন-হাদিসকে তাদের ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার একমাত্র পথ হিসেবে গণ্য করে, আমরা সবাই ভাই ভাই।

নিজেদের মাঝে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে, বুকে বুক মিলিয়ে, হাতে হাত রেখে বলিষ্ঠ আওয়াজ তুলি ‘আমরা মুসলিম’। এটিই আমাদের পরিচয়।

লেখক: এম.এ.আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL