সকাল নারায়ণগঞ্জ :
মোঃ ইয়াছিন (১৭) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। মোঃ ইয়াছিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন এনায়েতনগর লাকী বাজার এলাকায় সুমন ফকিরের বাসায় ভাড়া থেকে যুগালীর কাজ কর্ম করতো। গত ৩মে সন্ধ্যায় মোঃ ইয়াছিন প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষে বাসায় এসে ফ্রেশ হওয়ার পর তার বন্ধুদের নিয়ে লাকীবাজার এলাকায় চা খাওয়ার জন্য যায়। অতঃপর একই তারিখ রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় ঘটনাস্থলের পাশে জনৈকা মোসাঃ সোনালী এর ভাঙ্গারীর দোকান সংলগ্ন গলিতে দাঁড়িয়ে মোঃ ইয়াছিন তার বন্ধুদেরসহ আড্ডা দেওয়ার সময় মোঃ ওসমান শেখ(১৬) তাদেরকে এইখানে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তীতে উক্ত স্থান হতে মোঃ ইয়াছিন ও তার বন্ধুরা বাজারের এক পাশে চলে যায়। অতঃপর মোঃ ইয়াছিন ও তার বন্ধুরা একই তারিখ রাত অনুমান ০৯:১৫ ঘটিকায় ঘটনাস্থলের পাশে বিবাদী মোঃ ওসমান শেখ এর ভাঙ্গারীর দোকানের মালিক জনৈকা মোসাঃ সোনালী এর নিকট বিচার দেওয়ার জন্য রওনা দেয়। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মোঃ ওসমান শেখের সাথে পুনরায় মোঃ ইয়াছিন ও তার বন্ধুদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওসমান চিৎকার করলে আবদুল্লাহ সহ অজ্ঞাত ২-৩ জন ইয়াছিন ও তার বন্ধুদের স্টীলের পাইপ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারী পিটাতে থাকে। তারা দৌঁড়িয়ে পালানোর সময় ওসমান শেখ তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দ্বারা সজোরে মোঃ ইয়াছিন এর মাথায় আঘাত করলে সে মাথায় গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে। তখন মোঃ ওসমান শেখ তার হাতে থাকা স্টীলের পাইপ দিয়ে মোঃ ইয়াছিনের বুকের ডান পাশে সজোরে আঘাত করলে উক্ত পাইপ তার বুক ছিদ্র হয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়ে ছটফট করতে থাকে। উপস্থিত লোকজনদের সহায়তায় দ্রুত তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য খাঁনপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায়। উক্ত হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোঃ ইয়াছিন (১৭) কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গত ৩ মে মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৯), সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তার মেজো ছেলে মোঃ ইয়াছিন(১৭) এর হত্যার ঘটনায় মোঃ ওসমান শেখ (১৬) ও আব্দুল্লাহ (১৬) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। উক্ত মামলা রুজু হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একাধিক টিম ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে।
সোমবার (৫ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার এএসআই (নি:) এস এম
ইলিয়াস হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স এর সহায়তায় রাত্রিকালীন
স্পেশাল-৩৩ ডিউটি করাকালীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোডনাইল ক্যানেল পাড় সাকিনস্থ চেয়ারম্যান অফিসের ব্রীজের এর দক্ষিণ পার্শ্বে সেলিম মিয়ার বাড়ীর সামনে পাকা রাস্তার উপর হতে গ্রামবাসীর সহায়তায় আইনের সাথে জড়িত শিশু ওসমান শেখ ও আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত শিশু ওসমান শেখ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর লাকী বাজার এলাকার আঃ রহিম এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত লতিফ শেখের ছেলে ও শিশু আবদুল্লাহ একই এলাকার গুল্লো ওরফে গোল্লার ছেলে।
ধৃত আইনের সাথে জড়িত শিশুরা প্রাথমিকভাবে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে এবং তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।