সকাল নারায়ণগঞ্জ :
বাবুর্চি ও অটো রিকশা চালানোর আড়ালে চলে ডাকাতির পরিকল্পনা করে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানায় একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত ১জন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে র্যাব- ১১, সদর কোম্পানী, নারায়ণগঞ্জ।
গত ২৬ মার্চ অনুমান বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাহেব পাড়াস্থ এভেস্টা এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানে ৫০/৬০ জন অজ্ঞাত নামা দুস্কৃতিকারী প্রবেশ করে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রেখে আনুমানিক
তিন কোটি চৌত্রিশ লক্ষ একত্রিশ হাজার নয়শত পঞ্চাশ টাকার মালামাল লুট করে একটি অজ্ঞাত ট্রাক যোগে পালিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনায় অত্র এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্ছ থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করে, যার, মামলা নং ৪৯, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড ১৮৬০।
উক্ত ঘটনায় জড়িত আসামীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব- ১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও এজাহার পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাহেব পাড়াস্থ এভেস্টা এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ
নামক প্রতিষ্ঠানে গত ২৬ মার্চ ০৮/১০ জন আনসার সদস্য বাদীর প্রতিষ্ঠানে ডিউটি করাকালে বিকাল অনুমান সাড়ে ৫টার সময় ২ জন আনসার সদস্য বাহির হতে ইফতার ক্রয় করে প্রতিষ্ঠানের উত্তর পাশের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশকালে অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন দুস্কৃতিকারীরা অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে বাদীর প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে দুষ্কৃতিকারীরা দায়িত্বরত আনসারদের মারধর করে আটকে রেখে আনসার সদস্যদের অস্ত্র-গুলি ও মোবাইল ফোন দুষ্কৃতিকারীরা তাহাদের দখলে নিয়ে নেয়। দুস্কৃতিকারীরা আনসার সদস্যদের হাত-পা বেধে প্রতিষ্ঠানের ২য় তলার একটি অফিস রুমের ভিতরে আটকে রেখে বাহির হতে দরজা লাগিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে দুস্কৃতিকারীরা বাদীর প্রতিষ্ঠানের মেইন লাইন হইতে বিভিন্ন মেশিনের সহিত সংযুক্ত পাওয়ার ক্যাবল, যা তামার তারের উপরে কালো ইনসুলিশন দ্বারা মোড়ানো ঘণণ ক্যাবল সহ সর্বমোট আনুমানিক তিন কোটি চৌত্রিশ লক্ষ একত্রিশ হাজার নয়শত পঞ্চাশ টাকার মালামাল লুট করে গত ২৭ মার্চ রাত অনুমান ৩টার সময় দুস্কৃতিকারীরা একটি অজ্ঞাত ট্রাক যোগে প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক দিয়ে বের হয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়। দস্কৃতিকারীরা যাওয়ার পর আনসার সদস্যরা পারস্পরিক সহায়তায় তাদের বাঁধন খুলে অফিস কক্ষের জানালা দিয়ে বের হয়ে গ্রিলের মাধ্যমে নিচে নেমে প্রতিষ্ঠানের উত্তর পার্শ্বের মূল ফটক খোলা দেখতে পায় এবং ফ্লোরে ট্রাকের চাকার দাগ দেখতে পায়। আনসার সদস্যদের অস্ত্র-গুলি ও মোবাইল ফোন প্রতিষ্ঠানের ভবনের সিঁড়ির সামনে পাকা ফ্লোরে পাওয়া যায়। এমতাবস্থায় আনসার সদস্যরা বাদীকে ও প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানালে বাদী ঘটনাস্থলে যায় এবং ঘটনার বিস্তারিত শুনে প্রতিষ্ঠানের লুন্ঠিত হওয়া মালামালের হিসাব-নিকাশান্তে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা শেষে থানায় এসে এজাহার দায়ের করলে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। চাঞ্চল্যকর এই ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে দুর্ধর্ষডাকাত মোঃ শফিক (২৬)’কে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কাঁচপুর এলাকা হতে রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ শফিক নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন নিমাই কাসারী এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে।
এই ডাকাতির ঘটনাসহ নারায়ণগঞ্জ ও দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।