নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনহীন বেকারি কারখানায় নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমারি খাবার। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বারুহাস বাজারে বাড়ি ভেতরেই তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন বেকারি পণ্য। আর এই সব খাবার যাচ্ছে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন দোকান থেকে শুরু করে নামিদামি বেকারিতে। বিক্রি হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, সন্দেশসহ নানা বাহারি খাবার। কখনও কি কেউ ভেবে দেখেছেন এই খাবারগুলো কোথায় তৈরি হচ্ছে? কী দিয়ে তৈরি হচ্ছে? এসব খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও যাচাই করার দায়িত্বে যারা আছেন তারা তাদের দায়িত্ব কতটা পালন করছেন? এক কথায় না।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে নামে-বেনামে অনুমোদনহীন বেকারি। যেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাদ্যপণ্য। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর বানিয়ে চলছে বিস্কুট, কেক, মিষ্টি, চিনি দিয়ে তালমিশ্রি সহ নানা খাবার।
চারদিকে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ, পাতিলে কালো পোড়া তেল, কেমিক্যালের রং ও কৃত্তিম ফ্লেভার ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন বেকারি পণ্য।
বেশির ভাগ শিশুর পছন্দের খাবারের তালিকায় বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ নানা জাতীয় বেকারির পণ্য রয়েছে। আবার অনেক সময় পরিবারের অন্য সদস্যরা এই জাতীয় খাবার বাজার থেকে কিনে খান। এসব খাদ্যসামগ্রীর চাহিদাও মোটামুটি বেশ। এ ছাড়া বাসাবাড়িতে কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গেলেও বেকারি পণ্য দিয়ে অনেকেই অতিথিদের আপ্যায়ন করে থাকেন। পৌর শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে হরহামেশাই প্রতিদিন পৌঁছে যায় এসব খাদ্যসামগ্রী।
সরেজমিনে গিয়ে বেশ কয়েকটি বেকারিতে দেখা যায়, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। কর্মচারিদের হাত-পায়ে লেগে আছে ময়লা। শরীর থেকে ঘাম পরছে। এ অবস্থায় তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন বেকারিজাত খাদ্যদ্রব্য।
উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রণয়ন এবং গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণ কোনো ব্যবস্থা নেই। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর
অনুমোদনসহ নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ। খবর রাখেন না পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকটি বাজারে কিংবা বাড়িতে স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী হচ্ছে বেকারি খাবার। অভিযোগ রয়েছে খাবার তৈরীতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ও নিম্নমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরী করছেন।
নোংরা ও অপরিষ্কার কড়াইতে আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরী করা ক্রিমের পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারি ফাস্টফুড খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে।