নিরাপদ সবজির নিশ্চয়তা বাংলাদেশের, বিশেষত নগর এলাকার জনগণের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য দেশব্যাপী কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সহায়ক উপকরণ প্রদান, মনিটরিংসহ বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
বাজার ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবের কারণে কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ১৬টি কৃষকের বাজার স্থাপন করছে। আজ গাজীপুর শহরে ২য় এবং প্রকল্পের ৭ম কৃষকের বাজারটি স্থাপিত হলো। আমাদের প্রত্যাশা বাজারটি এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি সহজতর করবে।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ সকাল ৮.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে গাজীপুর সদরের রাজদিঘীর পশ্চিমপাড়ে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী আয়োজনে বক্তারা এ কথা বলেন।
কৃষকের বাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ হাসান আজমল ভূঁইয়া। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সংস্থার সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মোছাঃ আয়েশা আক্তার, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৮,২৯,৩০, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, মো আব্দুল হামিদ সরকার, বস্তি উন্নয়ন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন; গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম, গাজীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হাসিবুল হাসান, নজরুল ইসলাম সরকার, সভাপতি, রাজদিঘীর পাড়, আওয়ামী লীগ, খালিদ মোঃ আলী রাজিব, সাধারণ সম্পাদক, রাজদিঘীর পাড়, আওয়ামী লীগ এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ শহীদুল ইসলাম।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ হাসান আজমল ভূঁইয়া বলেন, এলাকাবাসীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যেই কৃষকের বাজার কার্যক্রমটি এই ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি।
কৃষকের বাজারের মাধ্যমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতের দিকে আমরা কিছুটা অগ্রসর হলাম। এ ধরণের কার্যক্রম দেশব্যাপী গ্রহণ করা আবশ্যক।
২৮ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি সকল ধরণের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
মোছাঃ আয়েশা আক্তার, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৮,২৯,৩০, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বলেন, কৃষক থেকে ভোক্তা সকলকে নিরাপদ খাবার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
বর্তমানে উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে খাদ্যপণ্য দূষিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সকল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি আবশ্যক।
মো আব্দুল হামিদ সরকার, বস্তি উন্নয়ন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গাজীপুর শহরে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উদ্যোগসমূহ প্রশংসনীয়।
জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে দেশব্যাপী এ ধরণের কার্যক্রম বিস্তৃত করা প্রয়োজন।
গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, জৈবকৃষি ও উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যথাসম্ভব কম বালাইনাশকের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সঠিক সময় ও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত নিরাপদ চাষীদেরই এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তারা আমাদের নিয়মিত তদারকির মধ্যে থাকেন।
এভাবে আমরা জনগণের নিরাপদ সবজি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারি।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কৃষকের বাজারে ভোক্তাগণ সরাসরি কৃষকদের থেকে নিরাপদ সবজি কিনতে পারবেন।
কৃষকের বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো কৃষক ও এলাকাবাসী।
কৃষক কর্তৃক এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী নিরাপদ পণ্য নিয়ে আসা এবং এলাকাবাসী কর্তৃক সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই এ কার্যক্রমটি সফল করা সম্ভব।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সারা পৃথিবীতে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতের জন্য কাজ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় কাঁচাবাজারের মান উন্নয়ন, ছাদবাগান, নগরকৃষি, কৃষকের বাজার স্থাপনসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে কাজ করছি।