নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার একটি হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সাহা (৫৫) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এরআগে বৃহষ্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটনের খুলশী থানাধীন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। গ্রেপ্তারকৃত সাহা আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার মোল্লারচর গ্রামের আফাজউদ্দিনের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, ১৯৯৫ সালের ৩১ অক্টোবর আড়াইহাজারে ভিকটিম আছমা বেগম (১৮) ভাপা পিঠা খেয়ে মৃত্যুবরণ করলে আড়াইহাজার থানায় একটা অপমৃত্যু হয় যার মামলা নং- ১৬/৯৫, ০১/১১/১৯৯৫।
পরবর্তীতে মামলাটি সিআইডি তদন্তকালে ভিকটিমের ভিসেরায় বিষের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে ভিকটিমের বোন বাদী হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-২১(০৪)৯৭, ধারা ৩০২/৩৪।
এদিকে এ ঘটনার আরো কিছুদিন পূর্বে ভিকটিম তার স্বামীর বাড়ি হতে নিজ পিতার বাড়িতে আসার পথে ১ নং অভিযুক্ত রুস্তম আলী ভিকটিমকে জোরপূর্বক চট্টগ্রামে নিয়ে যায় এবং বিয়ে করে বলে জানা যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম মারা যাওয়ার কিছুদিন পূর্বে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে তালাকনামা নেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রুস্তম এবং তার বন্ধু শাহা পরকল্পিতভাবে ভাপা পিঠার সাথে বিষ মিশিয়ে ভিকটিম আছমাকে হত্যা করে। ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি তারিখে তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।
এ বিষয়ে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সাহার স্বীকারোক্তি মতে ঘটনার পর থেকে সে নিজ এলাকা ত্যাগ করে এবং চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটনের খুলশী থানাধীন নাছিরাবাদ এলাকায় তার আপন বড় বোনের ভাড়াটিয়া বাসায় আনুমানিক ২০ বছর পলাতক থাকে। পরে যখন নিম্ন আদালত কর্তৃক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয় তখন সে কোর্টে আত্মসমর্পণ করে এবং ১ বছর ১১ মাস জেল খাটে।
পরে দন্ডপ্রাপ্তরা নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে আপীল করলে মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট ২০১৯ সালে নিম্ন আদালতে সাজা বহাল রাখেন। এর মধ্যে জামিনে বের হয়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামী আবারও আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, হত্যাকাণ্ডটি সংঘঠিত হওয়ার পর থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি চট্টগ্রামের একটি এলাকায় আত্মগোপনে বসবাস করে আসছিলেন। বৃহষ্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।