সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য, স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত (মরোনত্তর) একেএম সামসুজ্জোহা’র সহধর্মীনী ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মরহুমের মেঝো ছেলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উদ্যোগে শনিবার (৫ মার্চ) সকালে বন্দর উপজেলার মদনপুরে অবস্থিত নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
প্রথমে স্কুলে অবস্থিত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা’র প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সেলিম ওসমান ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
পরে মিলাদ মাহফিলের পূর্বে পরিবারের জন্য দোয়া চেয়ে সেলিম ওসমান বলেন, আমার বাবা চলে গেছেন আজ প্রায় ৩৫ বছর। আমার মা চলে গেছেন ৬ বছর আগে। আমার বড় ভাই চলে গেছেন ৭ বছর আগে। হায়াতের কথা তো কেউ আর বলতে পারে না। তাই আমরা সবাই সবার জন্য দোয়া করবো। আমরা দোয়া করবো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। একবার ভেবে দেখবেন গত দুই বছরে যদি কোন উন্নয়নে আটকে তাকি বা ব্যবসায় কোন লস হয়ে থাকে সেগুলো আমরা কোন না কোন ভাবে পুষিয়ে নিতে পারবো। তবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কিন্তু শিক্ষার দিক দিয়ে কয়েক যুগ পিছিয়ে গেছে।
সেলিম ওসমান বলেন, আমি আজ আপনাদের কাছে শুধু দোয়া চাইতে এসেছিলাম। তবে এখানে এসে খোঁজ খবর নিয়ে যানলাম এসএসসি’র ২০ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করানো পরেও স্কুলে আসে না। এই দায়িত্বটা কিন্তু শুধু স্কুলের না, এ বিষয়ে সকলের খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কারো যদি আর্থিক সমস্যা থাকে তাহলে আমাকে জানাবেন। তাদের জন্য দরকার পরলে স্পেশাল ক্লাসের ব্যবস্থা করানো হবে। যাতে তারা পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারে। অনেক মাস্টার সাহেবরা ভয় পান যে, এই ছাত্ররা যদি পরিক্ষা দেয় তাহলে স্কুলের নাম খারাপ হবে। আমি আপনাদের বলবো, তাদের পড়াতে হবে এবং পাশও করাতে হবে। বড় বড় বিল্ডিং বানালে তো হবে না, শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত বানাতে হবে।
সেলিম ওসমান আরও বলেন, যখন আমি এই স্কুলে আসি তখন কিন্তু আমার মনে হয়না যে, আমার মা ৬ বছর আগে আমাদের রেখে চলে গেছে। যখন ওই (সামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে) স্কুলে যাই তখন আমি মনে করিনা যে আমার বাবা আমাদের রেখে চলে গেছে। যখন আমি নাসিম ওসমান স্কুলে যাই তখন আমার মনে হয়না আমার ভাই আমাদের রেখে চলে গেছে। আমি আপনাদের সকলকে বলতে চাই, আমাদের সুশিক্ষিত জনপ্রতিনিধি দরকার। শীতলক্ষ্যা ব্রিজ বলেন অথবা নাসিম ওসমান ব্রিজ বলেন, এটার কাজও কিন্তু অনেকটা শেষের পথে। করোনা থেকে কিন্তু আমরা মুক্তি পেতে যাচ্ছি। তবে রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবো। বাজারে গেলে যে বেগুনের দাম ৪০ টাকা ছিলো সেটা ৮০ টাকা হয়ে গেছে, এদিকে সামনে আবার রমজান মাস। এখানে এই উপজেলার সব চেয়ারম্যানরাই আছেন, তাদের আমি বলবো- ‘দাম যাতে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন’।
পরে মরহুম ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা’র আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদ, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরত-এ-খোদ, বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানা উল্লাহ সানু, বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা, বন্দর উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা ইসলাম শান্তা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিমউদ্দিন প্রধান, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, ২৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর দুলাল প্রধান, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ গাজী সালাম ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতা আরাফাত কবির ফাহিমসহ বন্দর উপজেলার অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।