স্টাফ রিপোর্টার (আশিক): ছোট্ট সোহান। কতইবা বয়স। ১০-১১ বছর হবে। এ সময় তার থাকার কথা স্কুলে, বন্ধুদের সাথে হৈচৈ করা, খেলাধুলা করা। না, সে তা পারেনি। শুয়ে আছে হাসপাতালের বিছানায়। সে রক্তের জটিল রোগে ভুগছে। চিকিৎসকদের মতে তার রোগের নাম ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা (Immune Thrombocytopenic Parpura)।
সোহানদের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার গোপালপুর গ্রামে। তার বড় এক বোন রয়েছে। বাবা মারা গেছেন। মা পারভীন অভাব-অনটনের সংসার কোনমতে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল কষ্ট করে হলেও ছেলে-মেয়েদের মানুষ করবেন। ছেলের জটিল রোগ ধরা পড়ায় সহায়-সম্বলহীন মা এখন দিশেহারা।
সোহানের অসুস্থতার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার নজরে আসে। তিনি শিশুটির চিকিৎসায় সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় পুনাক সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সোহানকে দেখতে যান। তিনি সোহানের সাথে কথা বলেন এবং তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান সোহানের চিকিৎসার সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে পুনাক সভানেত্রীকে অবহিত করেন।
পুনাক সভানেত্রী বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাকের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা তার মায়ের হাতে তুলে দেন। তিনি সোহানের জন্য খেলনা গাড়ি, বেলুন এবং বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে যান। পুনাক সভানেত্রীর মহানুভবতায় সোহানের মা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি পুনাক সভানেত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জীশান মীর্জা বলেন, পুনাক সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কাজ করছে। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোহানের অসুস্থতার খবর পেয়ে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। তিনি থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
পরে তিনি থ্যালাসেমিয়া রোগের ওপর একটি ডকুমেন্টারি দেখেন এবং থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকদের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পুনাকের স্বাস্থ্য সম্পাদিকা ডা. প্রথমা রহমান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত ডিআইজি রখফার সুলতানা খানম, এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মোঃ কামরুজ্জামান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ।