সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
যখন পুরোবিশ্ব থমকে গেছে এক করোনা ভাইরাসে, থেমে গেছে বিশ্ব বাজার, আতঙ্কিত হয়ে মানুষ রয়েছে গৃহবন্দী, যখন সুসময়ের নেতারাও আজ লকডাউন মেনে সুবিধা বঞ্চিত জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন, ঠিক সেই মুহুর্তে রাতের আধারে কিংবা দিনের আলোতে প্রকাশ্যে ও গোপনে মাদার তেরেসা হয়ে জনগনের পাশে এসে দাঁড়ালেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা।
করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই জনগনের জন্য জীবন বাজি রেখে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দিয়ে যাচ্ছেন ত্রান। খেয়ে না খেয়ে, ভোর থেকে শুরু করে রাতে ১১টা পর্যন্ত বিরতিহীন ছুটে চলা। আজ পবিত্র মাহে রমাজান উপলক্ষে দিনের বেলায় ছুটে চলছেন সরকারী ত্রান নিয়ে, আর রাতের আধারে ছুটে চলছেন ব্যাক্তিগত ত্রান নিয়ে, ব্যাক্তিগত ত্রানে তিনি ছবি তুলতেও নারাজ, তার ভাষ্যমতে সরকারী ত্রান যেহেতু একটা হিসাবের মধ্যে রাখা হয় বা আমাদের ছবি তোলার নির্দেশ আছে সেহেতু বাধ্য হয়ে তুলতে হয়, আর ব্যাক্তিগত ত্রান এটা আমি মনে করি জনগনের সেবা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দেওয়া, আপনি কতজনের ছবি তুলবেন, রাতে যখন আমরা খাবার নিয়ে যাই, অনেকে ঘুমে থাকে, তারা ঘুম থেকে জেগে যখন হাতে খাবারের ব্যাগটা পায়, তখন জড়িয়ে ধরে এতোটাই কান্না করে যে, নিজের চোখের পানিও ধরে রাখতে পারিনা। স্বামীহারা ছোট বাচ্চা থাকা নারীগুলো খুবই অসহায়, একজন নারীর দুঃখ কষ্ট শুধুমাত্র একজন নারীকেই বলতে পারে। নারী কাউন্সিলরকে যতটা প্রকাশ্যে কষ্টগুলো শেয়ার করতে পারে, পুরুষ কাউন্সিলর এর কাছে ততটা পারেনা, বয়োঃবৃদ্ধ মানুষগুলো যখন খাবার হাতে নিয়ে মা বলে ডাক দেন তখন সত্যিই হৃদয় জুড়িয়ে যায়।আজ একটু পরিশ্রম বেশি হয়েছে, কারন রাত পোহালেই রোজা, আমরা সরকারী ত্রানগুলো ভোটার স্লিপ দেখে দিয়েছি, কিন্তু ভোটার ছাড়াও অনেক অসহায়, দিন মজুর আছে যাদের এই পরিস্থিতিতে একবেলা খাবারের ব্যাবস্থা নাই, তাদের লিস্ট করে রাতে ব্যাক্তিগত ভাবে দিয়েছি, যেনো সাহারী করে রোজা রাখতে পারে। মানুষগুলোর দুঃখ কষ্ট খুব কাছে থেকে দেখেছি, সবাই বলে আপা, সেফ থাকেন, অবস্থা ভালোনা, আমিও দেখি অবস্থা ভালোনা, কিন্তু আমি একা সুস্থ থাকতে গিয়ে কত সুস্থ মানুষ খাবার না পেয়ে অসুস্থ হয়ে যাবে
এমনি ভাবে কাজ করে যাওয়ায় একাধিক বার বিভিন্ন মানুষ তার সুনামে পঞ্চমু।ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন অনেকে , এছাড়াও অনেকে তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার মাদার তেরেসা বলেও উপাধি দিয়ে যাচ্ছেন।
পাঠক কর্তৃক প্রদেয় বিজ্ঞপ্তি