সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
১৭ ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১ ঘটিকায় অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক এবং ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, আইন প্রশাসন নীরব, অথচ রাজপথে একক নেতৃত্বে সমঝোতার বার্তা দিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. টিপু
নারায়ণগঞ্জ শহরের ব্যস্ততম লিংক রোড, জেলা পরিষদ ভবনের সামনের সড়ক এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পেল নগরবাসী। অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক এবং ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অটোরিকশার চাকার টিউব ফাটা করা কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন সেই সংঘর্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে সাহসী ভূমিকা রাখলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে লিংক রোডে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তারা নিয়মিতভাবে অবৈধ যানবাহন বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করছিল। কিন্তু সোমবার দুপুরে হঠাৎ করেই কিছু অসাধু ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক অটোরিকশার চাকার টিউব ফাটা করা কে কেন্দ্র করে হামলা চালায় মুহূর্তেই পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রূপ নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এবং ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিং রোড সহ বিভিন্ন সড়কে দুই থেকে তিন ঘণ্টা জ্যাম সৃষ্টি হয়।
ঠিক এই সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো দৃশ্যমান উপস্থিতি ছিল না। ডিসি, এসপি, কিংবা ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাদেরও পাওয়া যায়নি। অথচ, এমন এক সংকটময় মুহূর্তে অপ্রত্যাশিতভাবে রাজপথে এগিয়ে আসেন অ্যাডভোকেট টিপু। তিনি বারবার ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের ও অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক দের শান্ত থাকতে আহ্বান জানান, এবং অপরদিকে ইজিবাইক চালকদেরও বুঝিয়ে বলেন রক্তপাত কোনো সমাধান নয়।
যদিও শুরুতে উভয় পক্ষই অ্যাডভোকেট টিপুর অনুরোধ শোনার পরিবর্তে রাজপথেই ফয়সালার দাবি জানায়, দুই পক্ষই তবুও তিনি পিছিয়ে যাননি। একাধিকবার শিক্ষার্থীদের ও চালকদের মাঝে গিয়ে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেন। অবশেষে, সকলকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যান তিনি। সেখানে তার প্রত্যক্ষ মধ্যস্থতা কে স্বাগত জানায় ডিসি ও এসপি উভয় পক্ষ কে আলোচনায় বসার উদ্বেগ গ্রহণ করেন এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছায়।
এই সমঝোতা সভায় অ্যাডভোকেট টিপুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. মো. সাখাওয়াত হোসেন খান। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ সেখানে যোগ দেন। আলোচনায় শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উভয়ের উপস্থিতিতেই শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের মধ্যে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়।
এ সময় এড. টিপু বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ শান্তি চায়, রাজপথে রক্তপাত বা সংঘর্ষে সাধারণ মানুষ কষ্টে পড়ে। আজকের এই পরিস্থিতি প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে। তবুও আমরা চাইনি কোনো মায়ের সন্তান রক্তাক্ত হোক। এজন্যই নিজের জীবন বাজি রেখে আমি দুই পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো গেছে। আমি একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আমার দায়িত্ব হলো নারায়ণগঞ্জের মানুষকে নিরাপদ রাখা, তাদের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা।
নারায়ণগঞ্জে এই ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষও অ্যাডভোকেট টিপুর এই দুঃসাহসী ও দায়িত্বশীল ভূমিকাকে প্রশংসা করছে।