সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস-২০২৫ উপলক্ষে “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেম-ওলামার ভূমিকা” শীর্ষক এক আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ ইসলামিক মিলনায়তনে। জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নারায়ণগঞ্জ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সোমবার, ৪ আগস্ট দুপুর ২টায় শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এডভোকেট মোঃ আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সদস্য-সচিব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব হাফেজ ক্বারী মোহাম্মদ শিব্বীর আহমেদ, আহ্বায়ক, জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জনাব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সহকারী পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নারায়ণগঞ্জ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান, ফিল্ড অফিসার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, নারায়ণগঞ্জ এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলার ফিল্ড সুপারভাইজারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিশিষ্ট আলেম-ওলামাগণও অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় বক্তারা ১৯৭৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি, তাৎপর্য এবং সে সময় আলেম সমাজের ভূমিকা গভীরভাবে তুলে ধরেন। তারা বলেন, সেই সময়ে যখন জনগণের ওপর নিপীড়ন ও অন্যায় বেড়ে গিয়েছিল, তখন আলেম-ওলামারা জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইসলামের আলোকে অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার যে ঐতিহ্য, তা বজায় রেখে আজও আলেম সমাজকে সক্রিয় থাকতে হবে।
প্রধান অতিথি এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক সাহসী অধ্যায়। সে সময়ের আলেম-ওলামারা শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনেও ছিলেন জাগরণের প্রতীক। আজকের সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে তাদের ভূমিকা আরও বেশি প্রয়োজন।”
বিশেষ অতিথি শিব্বীর আহমেদ বলেন,
“আলেমদের দায়িত্ব কেবল মসজিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজে ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য স্পষ্ট করা এবং ইসলামি আদর্শে সমাজ গড়ার ক্ষেত্রেও তারা নেতৃত্ব দেবেন। বর্তমান সময়ে ধর্মকে ব্যবহার করে যারা সহিংসতা ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে সত্যিকারের আলেমদের রুখে দাঁড়াতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন,
“ইসলামিক ফাউন্ডেশন সবসময় শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে আলেম সমাজকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক এই দিবসে আলেমদের অবদান স্মরণ করে আমরা আগামী দিনের পথনির্দেশনা খুঁজে পাই।”
অনুষ্ঠান শেষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। দোয়া মাহফিলে বক্তারা মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন যেন বাংলাদেশ শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যায়।
অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে আয়োজিত, যা উপস্থিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গভীর আবেগ ও অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে।