সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
শ্রম আইন সংশোধন, দ্রব্যমূল্য কমানো, শ্রমিকদের আর্মিরেটে রেশন প্রদান, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি আইন করার দাবিতে নারায়ণগঞ্জে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মিছিল ও সমাবেশ
শ্রমিক পক্ষের প্রস্তাবের ভিত্তিতে শ্রম আইন সংশোধন, দ্রব্যমূল্যেও কমানো ও শ্রমজীবীদের জন্য আর্মিরেটে রেশনিং চালু, জাতীয় নূনতম মজুরি আইন করার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকাল ৪ টায় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইন ২০০৬ শ্রমিকদের দাবি ও বিদেশি নানাচাপে বার বার সংশোধন করা হলেও শ্রমিকদের দাবি বরাবরই উপেক্ষা করা হয়েছে। আইএলও ৮৭ ও ৯৮ পরিপন্থি শ্রম আইন, শ্রমিকের সংগা, শ্রম আইনের ২০, ২৩ (ঘ), (ছ), ২৬, ২৭, ১৮০, ধারা, ঠিকাদারি ও আউটসোর্সিং প্রথা, অবহেলাজনিত মৃত্যুতে লঘু শাস্তি ও অপর্যাপ্ত ক্ষতিপুরনসহ নানা বিষয়ে সংশোধনী ও নতুন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কিন্তু ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ সভাকে পাশ কাটিয়ে বা সেখানকার সুপারিশ বা শ্রমিক পক্ষের সুপারিশ বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছ।
দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে শ্রমজীবীসহ দেশের মানুষ দিশেহারা। কিন্ত সেদিকে সরকারের কোন খেয়াল নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও শ্রমিকদের আর্মি রেটে রেশনের দাবি দীর্ঘদিনের। বর্তমানে তা বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের উপর নির্যাতন বিশেষ করে গৃহ শ্রমিকদের উপর নির্যাতন অনেকটা দাস যুগের মতই আছে। সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরে গৃহ শ্রমিক প্রীতি উরানের মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকের পর নারায়ণগঞ্জে কোন রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে শহরের সকল হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ অমানবিক। দেশের অর্থনৈতিক সংকটে পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ শহরের সংকট আরও তীব্রতর করবে। ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক, মিশুক উচ্ছেদের কথাও শোনা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের পরিষ্কার রায় আছে হাইওয়ে ছাড়া সর্বত্র এসকল রিকশা চলতে পারবে। উচ্ছেদ না করে অবিলম্বে ব্যাটারি রিকশার লাইসেন্স এবং রুট পারমিট দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন সংশোধনে শ্রমিক পক্ষের প্রস্তাব গ্রহণ করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আর্মি রেটে রেশন প্রদানসহ শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।