গাজীপুর মেট্রো সদর থানা এলাকার আদাবৈ গ্রামের সাইনবোর্ডে নিজ বিউটি পার্লারের পেছনের রুমে গত ৪ জুন রাত অনুমান ৮টার দিকে হাত-পা বাঁধা ও কাঁথা দিয়ে মুখ ঢাকা অবস্থায় উপুড় হয়ে পড়ে ছিল মোসাঃ রুবিনার নিথর দেহ।
রুবিনার মা আছিয়া বেগম খাবার দিতে গিয়ে দৃশ্যটি দেখে মুখ থেকে কাঁথা সরিয়ে মেয়ের মুখে নীলাফুলা জখম তথা আঘাতের চিহ্ন অবলোকন করেন। ওই অবস্থায় তিনি ডাক-চিৎকার করলে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে গিয়েও ওই অবস্থা দেখেন এবং থানা-পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রুবিনার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত সাপেক্ষ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ প্রেরণ করেন। পামাপাশি তার মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।
পরবর্তীতে জিএমপি, সদর থানার মামলা নং-১২, তারিখ-০৫/০৬/২০২৩খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
জিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ, পিপিএম এর নেতৃত্বে সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর জোন) ফাহিম আসজাদ, অফিসার ইনচার্জ সদর থানা মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম এবং মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ জহিরুল ইসলাম বিপিএমসহ সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ০৬ ঘন্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ দুই আসামীকে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।
শুধু তাই নয়- হত্যায় ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন অভিযানকারী পুলিশ টিম। গ্রেফতারকৃত আসামীরা থানা পুলিশকে জানায় যে- নিহত রুবিনা আক্তার এর স্বামী মৃদুল বোরখা পরে মোটরসাইকেল যোগে রুবিনার পার্লারে গিয়ে পরস্পরের যোগসাজসে রুবিনাকে হত্যা করেছে। রুবিনা আক্তার তার পিত্রালয় এলাকার আদাবৈস্থ সাইন বোর্ডে রাজকণ্যা বিউটি পার্লার দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। বিবাহের পর থেকেই নিহত রুবিনার স্বামী মৃদুল সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে স্ত্রী রুবিনার সাথে ঝগড়া বিবাদ করে আসছিল। সে রুবিনাকে কোন প্রকার ভরণ-পোষণ দিত না। বিগত এক মাস পূর্বে মৃদুল পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ করে বাসা হতে অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়।
হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ধৃত আসামীদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রদান করে। আসামী রাকিবুল ইসলাম ও সুমা রানী ঘোষকে পুলিশ রিমান্ডে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুমা রানী ঘোষ ১৬৪ ধারা মোতাবেক আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। ঘটনায় জড়িত অন্য পলাতক আসামী মৃদুলকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হয় এবং ইং-০৬/০৬/২০২৩ তারিখ আসামী সুমা রানী ঘোষ ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ঘটনায় জড়িত অন্য পলাতক আসামী মৃদুলকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাত রয়েছে।