ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজ করার ক্ষেত্রে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের ক্ষেত্রে এটি এক চমৎকার উদ্যোগ। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ অনন্য সংযোজন।
আইজিপি আজ (১৬ নভেম্বর ২০২২) সকালে স্পেশাল ব্রাঞ্চ হেডকোয়ার্টার্সের কনফারেন্স রুমে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সভায় সভাপতিত্ব করেন।
‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ এর মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট/ এমআরপি, পাসপোর্ট নবায়ন/সংশোধন, ইমিগ্রেশন সেবা, দ্বৈত নাগরিকত্ব, ভিসা ইসু/নবায়ন, নিবন্ধন, সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স, এনজিও সংক্রান্ত তথ্য, দত্তক, ভ্রমণ ইত্যাদি সেবা সহজে পাওয়া যাবে। এছাড়া, এ সংক্রান্ত কাজে সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহীতাগণ ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ এর মাধ্যমে অভিযোগ ও পরামর্শ প্রদান কিংবা কোন তথ্য প্রদান করতে পারবেন।
এ অ্যাপের মাধ্যমে পাসপোর্ট সংক্রান্ত অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় কোথাও অহেতুক মুলতবি থাকলে অথবা এসবি সদস্য কিংবা অন্য কোন সংস্থার সদস্য কর্তৃক দুর্ব্যবহার অথবা অনৈতিক প্রস্তাব পেয়ে থাকলে তাও জানানো যাবে। পাশাপাশি, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্র বন্দর দিয়ে যাতায়াতকালে দেশি-বিদেশি কোনো যাত্রী ইমিগ্রেশন অফিসার কর্তৃক দুর্ব্যবহার বা হয়রানির শিকার হয়ে থাকলে এ অ্যাপের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করা যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের ‘প্লে স্টোর’ থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে।
এর আগে আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাল্টিপারপাস হলে এসবি’র সদস্যগণের উদ্দেশ্যে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে ব্রিফিংয়ে সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম পিপিএম, এসবি’র ডিআইজি (প্রশাসন) মোঃ হুমায়ুন কবির বক্তব্য রাখেন। এসবি’র বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, এসবি সবচেয়ে পুরনো, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এসবি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, রাজনৈতিক, আইন-শৃঙ্খলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ধর্মীয় উৎসব পালনসহ যেকোন ইস্যুতে আগাম গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করে থাকে। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এসবি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহে বাংলাদেশ পুলিশের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। পুলিশের সক্ষমতা বেড়েছে, পেশাদারিত্ব বেড়েছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শুধু পুলিশেরই নয়, দেশের সর্বক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় এখন প্রায় তিন হাজার ডলার।
আইজিপি বলেন, এসবি অনেক ভালো কাজ করছে। এজন্য আত্মতুষ্টিতে ভুগলে হবে না। দেশের জন্য আরও ভালো কাজ করতে হবে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও বেশি তৎপর হতে হবে।
আইজিপি বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন ও বিকাশের সাথে সাথে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিজিটাল সোর্সের ব্যবহার বাড়ছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য সোর্স ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আইজিপি।
আইজিপি এসবি’র অফিসার ও ফোর্সের কল্যাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় মনযোগ দিয়ে শোনেন এবং তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি এসবির সুসজ্জিত আধুনিক লাইব্রেরি উদ্বোধন এবং অপারেশনস কন্ট্রোল রুম পরিদর্শন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, এসবি সরকারের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গোয়েন্দা সংস্থা। নবীন এবং প্রবীণ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। অনেক সফল কাজের পাশাপাশি এসবি’র রেকর্ড অ্যান্ড আর্কাইভস শাখায় রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন, বাংলাদেশ’, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ইত্যাদি সংকলন।
আইজিপি এসবি’র বর্তমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল ভিডিও চিত্র উপভোগ করেন। তিনি এসবি’র সার্বিক কার্যক্রমের ভূয়সি প্রশংসা করেন।