নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টকর্মীর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার চারদিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন সহ আসামীদের গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় দুই ছিনতাইকারী চক্রের প্রধান সাগর ওরফে কুত্তা সাগর এবং জয়চান ওরফে বিশাল নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি এবং ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি উদ্ধারসহ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তি দিয়েছে আসামীরা। মঙ্গলবার (১লা নভেম্বর)দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তাফা রাসেল।
এসপি রাসেল জানান, কুষ্টিয়ার নিজ বাড়ি থেকে কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় জে.এস বাস যোগে ভোরে এসে পৌছেছিল জনি। পরবর্তীতে ২৯ অক্টোবর ভোরে বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে চাষাড়া ক্রসিং এর দিকে যাওয়ার পথে সদর থানাধীন রেললাইনের কাছে পৌছালে ছিনতাইকারীরা জনিকে জিম্মি করে। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের হাটুর উপরে একটু পিছনের দিকে ছুরিকাঘাত করে তার ইনটেল মোবাইলফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ওইসময় ছিনতাইকারীদের আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে জয়নুর রহমান জনি মারা যায়।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীরা ফতুল্লা থানা এলাকার বাসিন্দা। সাগর ওরফে কুত্তা সাগরের (২৩)পিতা- সালাউদ্দিন। তার নিজ জেলা শরীয়তপুর, থানা-সখিপুর। বর্তমানে সে জামতলা ধোপাপট্টি রাজিব মিয়ার বাড়ীতে ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতো। অপর আসামী জয়চান ওরফে বিশাল (২৪), পিতা-মৃত মানু চান। সে বর্তমানে ৪নং ডিআইটি কাঠের মার্কেটের ঠিকানায় থাকতো। তার নিজ জেলা ঢাকা ও থানা দক্ষিন কেরানীগঞ্জ। আর হত্যাকান্ড ঘটিয়ে কেরানীগঞ্জেই তারা আত্মগোপনে থাকার চেষ্টা করেছিল।
পুলিশ সুপার জানায়, জনি ফতুল্লা এলাকায় বিসিক শিল্প নগরীর ফেইম এ্যাপেয়ারেলস লিঃ কাজ করতো। জনি দৌলতপুর থানার চরপ্রাগপুর গ্রামের লালটু হোসেনের ছেলে। যেহেতু হত্যাকান্ডটি হওয়ার পর দেহটি রেল লাইনে পড়ে ছিল। এজন্য রেলওয়ে পুলিশ মামলাটির তদন্তভারে রয়েছে। আমরা আসামীদের রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো। রেলওয়ে থানার মামলা নং-১৫, যার তারিখ-২৯/১০/২০২২খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল। মামলাটির বাদি নিহত জনির চাচা মোশাররফ মাহমুদ।
প্রসঙ্গত, মামলাটি রেলওয়ে থানায় রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্ত রাসেল (পিপিএম বার) নির্দেশক্রমে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদের মধ্য হইতে আসামী সনাক্ত সহ গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোঃ তরিকুল ইসলামের সার্বিক সহযোগীতায় এবং অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা জনাব আল মামুন এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) তারিকুল ইসলাম, এসআই(নিঃ) আতিকুর রহমান ভইয়া, এসআই(নিঃ) এএইচএম কামরুজ্জামান, এএসআই(নিঃ) সেলিম উদ্দিন, এএসআই(নিঃ) রঞ্জিত সরকার ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ নারায়গঞ্জ সদর ও ফতুল্লা থানা এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিন কেনারীগঞ্জ থানাধীন কাউটাইল সাকিনস্থ জনৈক আরব আল মামুন মিয়ার বাড়ী হইতে সাগর (২) কুত্তা সাগর (২৩) এবং জয়চান @ বিশাল (২৪) দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রফতার করার সময় ধৃত আসামীদের হেফাজত হইতে ঘটনার সময় ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার ও ভিকটিমের ব্যবহৃত ইনটেল মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।