যাত্রী পরিবহনের জন্য সিটি করপোরেশনের কোনো নিবন্ধন নেই। এরপরও প্রকাশ্যে ট্রাফিক পুলিশের চোখের সামনে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মিশুক। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে নগরবাসী। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনাও।
নগরবাসীর ভাষ্য, নগরে প্রচুর নিবন্ধনহীন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মিশুক চলাচল করছে। এর আধিক্য সবচেয়ে বেশি নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের কমবেশি সব পড়া-মহল্লাতেই। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতেও এসব যান চলতে দেখা যায়। অথচ অবৈধ রিকশা উচ্ছেদে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কিংবা
ট্রাফিক পুলিশ বারবার অভিযান পরিচালনা করার পরো কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা এই অবৈধ যানগুলো। দ্রুতগতিসম্পন্ন হওয়ায় এসব যানের চালক সহজে ব্রেক কষতে পারেন না। এতে প্রায়ই সড়কে রিকশা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।
অবৈধ অটোরিকশার ছড়াছড়ি, যত্রতত্র অটো স্ট্যান্ড ও মোটরসাইকেলসহ কার-মাইক্রো, পিকআপ ভ্যানের পার্কিং এবং ফুটপাত দখল করে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে চলছে দিব্যি বেচাকেনা। এতে নগরীর প্রধান সড়কগুলোর দু’ধারের ৫৮ ফুট ফোরলেন সড়কের প্রায় পুরোটাই অটোরিকশা আর হকারদের দখলে গেছে। এসব দখল মুক্ত করতে এবং অবৈধ অটোরিকশার লাগাম টেনে ধরতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতাকে দুষছে নগরবাসী।
সারাদেশের অ্যাসিড ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার ইজিবাইক অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু নির্দেশনা না মেনে নগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ ইজিবাইক। আর এসব পরিবহনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বড় এক চাঁদাবাজচক্র। রুট পারমিটের নামে ভিন্ন কৌশলে চলছে টোকেন ব্যবসা। বিশেষ কৌশল হিসেবে রাখা হয়েছে প্রতিবন্ধীদেরও।
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দিয়ে থাকে চিহ্নিত কিছু সংগঠন। এসব সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন স্থানীয় নেতা-জনপ্রতিনিধিরা। এসব রিকশা চলাচলের জন্য থাকতে হবে বিশেষ এক স্টিকার বা টোকেন। আবার এসব সংগঠন থেকে মাসোহারা নিতে বাদ যান না কথিত সাংবাদিক থেকে শুরু করে কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যও।
টোকেন সম্পর্কে জানতে কথা হয় বেশ কিছু অটোরিকশা চালকের সঙ্গে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মাসদাইর এলাকার এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘নামে টোকেন হলেও মূলত পুলিশের টাকা বলে জানি। অটোরিকশা রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রতিমাসে টোকেন নিতে হয়। টোকেন না থাকলে রাস্তায় রিকশা চলাচল করতে দেন না।
কেন এ টোকেন কিনতে হয়— এ বিষয়ে জানতে চাইলে অন্য এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘মূলত পুলিশ না ধরার জন্য এসব টোকেন কিনতে হয়। টোকেন থাকলে একটা নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো পুলিশি ঝামেলা থাকে না। তবে মাঝে মাঝে বিভিন্ন সার্জেন্ট গলির ভেতর এসে ধরে নিয়ে যায়। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারলে টো করে দেয়।