1. [email protected] : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. [email protected] : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
নবি মোর পরশমণি - সকাল নারায়ণগঞ্জ
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
পুলিশ ‍সুপারের সাথে ইসলামী আন্দোলনের মতবিনিময় নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন মুশিউর রহমানকে ভৎসনা করেছেন আদালত সেলিম খন্দকার খোকার মত্যুতে নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক উন্নয়ন ফোরামের গভীর শোক প্রকাশ জান্নাতুল বাকিতে ডা. রাশেদার দাফন সম্পন্ন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ-এর সাথে ইসলামী আন্দোলনের নেতৃকর্মীদের সাক্ষাত ইসলামী আন্দোলন নগর সাংগঠনিক সম্পাদকের মায়ের ইন্তেকাল বাস ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজশাহী জেলার ডিবি পুলিশ কর্তৃক ২৪ কেজি গাঁজা ও একটি ট্রাক জব্দ-সহ গ্রেফতার: ৩ বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগীয় কমিটির পরিচিতি ও আলোচনা সভা সকালে নারায়ণশঞ্জ – এর ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৬ষ্ঠ বছরে পদার্পন উপলক্ষে আলোচনা ও কেক কাটা

নবি মোর পরশমণি

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২
  • ৭৯ Time View

সকাল নারায়ণগঞ্জ অনলাইন ডেস্ক:

মুহাব্বত আরবি শব্দ। শব্দটির বাংলা অর্থ ভালোবাসা। মুসলমানদের কাছে বিশ্বনবি হজরত মোহাম্মদ (সা.) ভালোবাসার সর্বশ্রেষ্ঠ আসনে অধিষ্ঠিত। বিশ্বনবি মোহাম্মদ (সা.) কে ভালোবাসা ইমানের দাবি। স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনের চেয়েও একজন মুসলমান বিশ্বনবি (সা.)কে বেশি ভালোবাসেন। এমন ভালোবাসা না থাকলে কেউ মুসলিম হতে পারে না। উল্লেখ্য, বিশ্বনবি হলেন হজরত মোহাম্মদ (সা.)।

তিনি ‘মোহাম্মাদ’ এ জন্য যে, তিনি আল্লাহর কাছে প্রশংসিত, ফেরেশতাদের মাঝে প্রশংসিত, পৃথিবীবাসীর কাছে প্রশংসিত, যারা তার প্রতি ইমান এনেছে তাদের কাছে প্রশংসিত, এমনকি যারা ইমান আনেনি তাদের কাছেও তিনি তার গুণ ও মাহাত্ম্যের, চরিত্র ও মহানুভবতার কারণে প্রশংসিত। সৃষ্টির মধ্যে যার প্রশংসা সবচেয়ে বেশি করা হয়েছে আর জগৎ সৃষ্টির সূচনাকাল থেকে আজ পর্যন্ত যার প্রশংসা অব্যাহত রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে তিনি হলেন নবি রাসূলুল্লাহ (সা.)। ময়দানে হাশরে যে স্থানে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি শাফায়াত করবেন সে স্থানের নাম ‘মাকামে মাহমুদ’। সেদিন ‘লিওয়ায়ে হামদ’-প্রশংসার ঝান্ডা তার মোবারক হস্তেই উড্ডীন থাকবে।

বিশ্বনবি (সা.)কে ভালোবাসার মর্মার্থ হলো, তিনি মহান প্রভু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন থেকে যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ করা আর যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করা। মহান আল্লাহপাক বলেন, রাসূল (সা.) তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছেন, তা গ্রহণ কর আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক। (সূরা হাশর : আয়াত : ০৭।)

পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরিফে বিশ্বনবি (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা প্রসঙ্গ

এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘আপনি বলে দিন, তোমাদের কাছে যদি আল্লাহ, তার রাসূল এবং আল্লাহর পথে সংগ্রাম করার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে ওঠে তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের পরিবার-পরিজন, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দায় পড়ার আশঙ্কা কর এবং তোমাদের বাড়ি-ঘর, যা তোমরা পছন্দ কর, তাহলে অপেক্ষা কর আল্লাহর (আজাবের) নির্দেশ আসা পর্যন্ত। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সঠিক পথের দিশা দেন না।’ (সূরা তওবা, আয়াত : ২৪।)

আল্লাহপাক আরও বলেন, ‘হে নবি! বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ কর। আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আল ইমরান : আয়াত : ৩১।)

আল্লাহপাক বলেন, হে ইমানদারগণ, আল্লাহ্ ও তার রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তোমাদের সে কাজের প্রতি আহ্বান করা হয়, যা তোমাদের মাঝে জীবনের সঞ্চার করে। (সূরা আনফাল : আয়াত : ২৪।)

আল্লাহপাক আরও বলেন, নবির সঙ্গে ইমানদারের প্রাণেরও অধিক সম্পর্ক। তিনি তাদের সত্তা থেকেও তাদের কাছে অগ্রগণ্য। (সূরা আহযাব : আয়াত : ৬।)

উল্লিখিত আয়াতে কারিমাগুলোর মর্মবাণী নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরিফে এভাবে বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে, সব মানুষের চেয়ে, এমনকি তার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় না হই।-(সহিহ বুখারি, মুসলিম)

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত কখন হবে? জবাবে আল্লাহর রাসূল পালটা প্রশ্ন করলেন, কিয়ামতের জন্য তুমি কী প্রস্তুতি নিয়েছ? লোকটি বলল, এর জন্য আমি তেমন কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি; তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালোবাসি। রাসূল (সা.) বলেন, তুমি যাকে ভালোবাসো কিয়ামত দিবসে তুমি তার সঙ্গেই থাকবে।’ (সহিহ বুখারি।)

মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি প্রিয় না হই এবং আমার পরিবার তার পরিবারের চেয়ে বেশি প্রিয় হবে না।’ (কানজুল উম্মাল।)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তিনটি গুণ যার মধ্যে আছে, সে ইমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারে। এক. আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া। দুই. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা। তিন. কুফরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা।’ (সহিহ বুখারি।)

হজরত ওমর (রা.) একবার বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি আমার কাছে আমার জীবন ছাড়া অন্য সব বস্তু থেকে অধিক প্রিয়। হুজুর (সা.) বললেন, কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমার মহব্বত তার কাছে তার জীবনের চেয়েও বেশি না হইবে। হজরত উমর (রা.) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এখন আপনি আমার কাছে আমার জীবনের চেয়েও বেশি প্রিয়। (বুখারি।)

রাসূল (সা.) বলেছেন, মানুষের হাশর হবে তার সঙ্গে যার সঙ্গে তার মহব্বত রয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ।)

বিশ্বনবি (সা.)-এর ভালোবাসা পেতে করণীয়

১. মহান আল্লাহর বিধানগুলোকে রাসূল (সা.) কর্তৃক নির্দেশিত বিধান মোতাবেক পালন করা।

২. জীবনের সব ক্ষেত্রে ‘সুন্নাতে রাসূলের’ যথাযথ অনুসরণ করা।

৩. রাসূল (সা.)কে যে ব্যক্তি ভালোবাসে তাকে ভালোবাসা, আর যে তাকে অপছন্দ করে তাকেও অপছন্দ করা।

৪. সব আদর্শের চেয়ে তাঁর আদর্শকেই সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করা এবং সে মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা।

৫. ফরজ বিধানের সঙ্গে সঙ্গে সুন্নাতকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া।

৬. তাঁর আদর্শ মোতাবেক নিজেকে ও পরিবারকে পরিচালনা করা।

৭. তাঁর সমুজ্জ্বল আদর্শ অনুযায়ী সমাজ, রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে পরিচালনা করা।

৮. সব ধরনের কুসংস্কার, রুসম, বেদআতকে পরিহার করা।

৯. তাঁর শান, মানমর্যাদার ব্যাপারে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা প্রদর্শন করা।

১০. তাঁর আদর্শকে প্রচার ও প্রসারে বাস্তবিক অর্থে নিজেকে বাস্তবিক অর্থে নিবেদিত করা।

পরিশেষে বলা যায়, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসা পোষণ না করলে ইমানদার বলে কেউ বিবেচিত হবে না। অতএব, ইমানের অনিবার্য দাবি হলো-রাসূল (সা.)কে ভালোবাসা। আল্লাহপাক, আমাদের বিশ্বনবি (সা.) কে যথাযথভাবে অনুসরণ তথা তাঁর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসা, সোনাপুর, সদর, নোয়াখালী

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL